• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কালের সাক্ষী ঐতিহাসিক কিসমত মাড়িয়া মসজিদ


শাহীন আলম, রাজশাহী থেকে মে ২২, ২০২২, ০৩:১০ পিএম
কালের সাক্ষী ঐতিহাসিক কিসমত মাড়িয়া মসজিদ

রাজশাহী : দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শত শত প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন। এর মধ্যে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মঠ, স্মৃতিস্তম্ভ, দালান কোঠা, বদ্ধবিহার, দুর্গ, দুর্গপ্রাচীর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন, প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র ইত্যাদি উল্লেখ্যযোগ্য। এসব প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শণগুলোর মধ্যে মসজিদ এবং মন্দির বিভিন্ন গ্রন্থে বেশি করে আলোচিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন অনেক প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে যেগুলো নিয়ে কোন বই পুস্তুকে বা সেমিনারে এখন অবধি আলোচনা হয়নি। অর্থাৎ মূল্যবান এই স্থাপনাগুলো অনাবিস্কৃত রয়ে গেছে। 

স্থানীয় জনসাধারণের কাছে যদিও জানা বিষয়গুলো। তবে প্রসাশন কিংবা প্রাচীন স্থাপত্য শিল্প নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন এগুলো এখনো রয়ে গেছে তাদের দৃষ্টিরস্থাপত্যর বাইরে। এমনি একটি প্রাচীন স্থাপত্য হচ্ছে কিসমত মাড়িয়া মসজিদ। কিসমত মাড়িয়া মসজিদ রাজশাহী শহরের অদূরে দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ।

আনুমানিক ১৫০০ সালে এটি নির্মিত হয়েছিলো। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। এই মসজিদটি রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত। রাজশাহী সদর হতে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক ধরে প্রায় ১৩ কিলোমিটার গেলে শিবপুর বাজার হতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড ধরে এগিয়ে ৪-৫ কিলোমিটার গেলে এই মসজিদ পাওয়া যাবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত হলেও আজ পর্যন্ত এর কোন রক্ষনাবেক্ষণ বা সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমবাগান আর ফসলের ক্ষেতবেষ্ঠিত এ মসজিদটি সম্পর্কে গ্রামের জনগণের মধ্যে অনেক কিংবদন্তি কাহিনী প্রচলিত আছে।

কিসমত মাড়িয়া মসজিদের বিবরণ এ মসজিদ সম্পর্কে সঠিক কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না, তবুও নির্মাণশৈলী দেখে অনুমান করা হয় মসজিদটি আনুমানিক ১৫০০ সালে স্থানীয় কোন মুসলিম দরবেশ বা দিল্লির মুঘল শাসকদের নির্দেশে কোন জমিদার নির্মিত। মসজিদটির ক্ষয়ে যাওয়া দেয়ালে এখনও কিছু শৈল্পিক কর্ম বিদ্যমান। মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে শিল্পীদের কৃত পোড়ামাটির টেরাকোটা যা গাছ-ফুল-লতা ইত্যাদি ধারণ করেছে সেগুলো এ মসজিদের সৌন্দর্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। মসজিদটির তিনটি প্রবেশদ্বার আছে। প্রত্যেকটি দ্বারের ঠিক সামান্তরালে উপরে ছাদের মাঝামাঝি একটি করে গম্বুজ আছে।

মসজিদটির সামনে লাগোয়াভাবে ছোট্ট উচু উঠান (খোলা বারান্দা) আছে যা অনুচ্চ প্রাচির দ্বারা বেষ্টিত এবং একটি তিন ধাপী ছোট সিঁড়ি দ্বারা ভূমিতে সংযুক্ত। এর দক্ষিণে একটি দ্বিতল চৌচালা স্থাপনা আছে যা বিবির ঘর বলে পরিচিত। পুরো স্থাপনাটা নির্মিত হয়েছে চুন, সুড়কী ও ইট দিয়ে। দেশের অন্যান্য পুরাতন মসজিদের সাথে এই মসজিদের একটি সাধারণ ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়, তা হল মসজিদটির একেবারে সন্নিকটে কোন বড় জলাধার বা পুকুর-দীঘি নাই।

সোনালীনিউজ/এনএন

Wordbridge School
Link copied!