• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রঙ-বেরঙের বেলুন বিক্রি করেই চলে আবু কাইয়ুমের সংসার


আমিনুল হক বুলবুল, নান্দাইল মার্চ ৯, ২০২৩, ০৩:০৫ পিএম

নান্দাইল: বেলুন বিক্রেতা আবু কাইয়ুমের (৫৫) বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে। রোদ-বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে ১০ বছর ধরে গ্যাসভর্তি বেলুন বিক্রি করছেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় জনবহুল স্থানে ঘুরে ফিরে বেলুন বিক্রি করেন তিনি।

ফুলানো বেলুন বাতাসের সঙ্গে দুলতে থাকে। বেলুনের এক মাথায় সুতো দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। আর রঙ-বেরঙের এই বেলুন নিয়েই বেরিয়ে পড়েন আবু কাইয়ুম।

বিভিন্ন রঙ-বেরঙের বেলুন দেখে আকৃষ্ট হয় শিশুরা। অভিভাবকরাও শিশুদের আনন্দ দিতে বেলুন কিনে দেন। সব শ্রেণীর শিশুদের বেলুন খুবই প্রিয়। আর সেই বেলুন বিক্রি করেই চলে বেলুন বিক্রেতা আবু কাইয়ুমের সংসার।

প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি বেলুন বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিটি বেলুন ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়। প্রতিমাসে আবু কাইয়ুমের আয় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। আর বেলুন বিক্রির আয় দিয়েই চলছে স্ত্রী ও ১মেয়ে নিয়ে তার তিন সদস্যের সংসার। বাবা, মা কেউ বেঁচে নেই।

হাতি, ঘোড়া, জেব্রা, ডলফিন মাছ, কুমির,বিমান, পাখি, ফুল ও উড়োজাহাজসহ নানা পশু পাখির অবয়বে তৈরি হয় বেলুন। গ্যাস দিয়ে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বেলুনকে পশু-পাখি ও জলজ প্রাণীর মতো নানা আকৃতিতে পরিণত করা হয়।

গ্যাসভর্তি এইসব উড়ন্ত বেলুনের চাহিদা ভালো। প্রতিদিন আবু কাইয়ুম প্রায় ১ হাজার পাঁচশত টাকার বেলুন বিক্রি করেন। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইলের বিভিন্ন হাটবাজারে বেলুন বিক্রি করছেন।

বুধবার (৮ মার্চ )সকালে উপজেলার বীর কামটখালী দক্ষিণ বাজারে দেখা হয় আবু কাইয়ুমের সাথে। বাজারে তিনি হেঁটে হেঁটে রংবেরংয়ের গ্যাসবেলুন বিক্রি করছেন। দলবেঁধে ছোট শিশুরা রঙিন বেলুন কিনছে। তার এই খেলনা গ্যাসবেলুনগুলো ছোট বাচ্চাদের অনেক প্রিয়।

সারা বছর চলে তার এই বেলুন বেচার ব্যবসা। তবে ঈদ আর পুজায় ভালো হয় বেলুন বিক্রি। গ্যাসবেলুন বিক্রির আয় থেকেই চলে তার সংসার।

আবু কাইয়ুম থাকেন গফরগাঁওয়ে ভাড়া বাসায়। তার দলে রয়েছে ৫ জন।খালি বেলুন কিনে গ্যাস ভর্তি করে প্রতিদিন সকালে বের হয়ে যান তারা। সারাদিন ঘুরে ঘুরে ফেরি করে বিভিন্ন হাটবাজারে,রাস্তার মোড়ে,স্কুল- কলেজের সম্মুখে তিনি বেলুন বিক্রি করেন।কোন অনুষ্ঠান বা সভা-সেমিনারে বেলুন বিক্রি হয় বেশী। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আকৃষ্ট হয় নানা রঙের ও নানা ডিজাইনের বেলুন দেখে।আর শিশুদেরই বেশী প্রিয় এই বেলুন।

আবু কাইয়ুম জানান, সারা বছর চলে তার এই বেলুন বেচার ব্যবসা। তবে ঈদ আর পুজায় ভালো হয় বেলুন বিক্রি। গ্যাসবেলুন বিক্রির আয় থেকেই চলে তার সংসার।তাদের গ্রামের বাড়িতে কোন সহায়-সম্বল বলতে কিছুই নেই তার।প্রতি তিন বা ছয়মাস পরপর তারা বাড়িতে যান। পরিবার ও স্বজনের সাথে সাক্ষাত শেষে আবার বেরিয়ে পড়েন নতুন কোন স্থানে বেলুন বিক্রির উদ্দেশ্যে।

গ্যাসবেলুন বিক্রেতা আবু কাইয়ুম বলেন, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি বেলুন বিক্রি হয়ে থাকে। তাতে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকার বেলুন বিক্রি হয়।যা থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ থাকে।

স্থানীয় বীরকামট খালী দক্ষিণ বাজারের দিশারী কিন্ডার গার্টেনের নার্সারি ও ১ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাফি ও নোভা জানায়, আমাদের পছন্দের বেলুন কিনেছি। মাছ ও উড়োজাহাজ আকৃতির গ্যাসবেলুন কিনে নিয়েছি।মা আমাদের গ্যাসবেলুন কিনে দিয়েছেন।’

বিউটি আক্তার নামে এক মহিলা অভিভাবক বলেন, মেয়ের আব্দার তাই গ্যাস ভর্তি বেলুন কিনে দিলাম। এতে যেন তার আনন্দের আর শেষ নেই।

সোনালীনিউজ/এম

Wordbridge School
Link copied!