• ঢাকা
  • রবিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১

বাঁকখলী নদী এখন বিশাল চর


সাজন বড়ুয়া সাজু, কক্সবাজার সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম
বাঁকখলী নদী এখন বিশাল চর

কক্সবাজার: কক্সবাজার-মহেশখালী পারাপারের প্রধান তম নৌরুটের ৬ নম্বর জেটি ঘাটে এখন শুনশান নিরবতা। কয়েকটি নৌযান থাকলেও চালক কিংবা যাত্রী কেউই নেই। ভাটায় পানি শুকিয়ে বাঁকখালীতে জেগেছে চর। চরে বক-পাখি সন্ধান করছে খাবার।

বাঁকখালীর মোহনায় বালি ও পলি মাটির বিশাল চর জেগে উঠায় বন্ধ রয়েছে মহেশখালীর পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের পারাপারের একমাত্র ৬ নম্বর জেটি ঘাটের যাত্রী পারাপার। ফলে দিনভর ভোগান্তিতে থাকা এই নৌরুটের যাত্রীরা বেছে নিয়েছে বাঁকখালীর বিভিন্ন পয়েন্ট। প্রতিদিন সেইসব পয়েন্ট থেকে মহেশখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে কয়েকটি যাত্রীবাহী নৌযান। অন্যদিকে যাত্রী সংকটে পড়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে ১৫০টি নৌযানের চালক-মালিকরা। এইদিন বিআইডব্লিউটিএ ঘাটের এই ৬ নং জেটি ঘাটে এসে অপেক্ষার পরও ফিরে যেতে দেখা যায় অনেক মহেশখালীগামী যাত্রীদের।

একই অবস্থা মহেশখালীর গোরকঘাটা জেটি ঘাঁটেও। মূলত ভরা জোয়ারের পরে ভাটা হলেই কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটের দু’প্রান্তে এমন চর গজে উঠে। এমন অবস্থায় আবার যাত্রীদের সাগর পাড়ি দিতে অপেক্ষা করতে হয় ভরা জোয়ারের।

স্থানীয় নৌযান চালকরা বলেন, প্রতিবছর শীতের মৌসুম শুরু হলেই চর জেগে উঠে দুই জেটি ঘাটে। আটকা পড়তে হয় যাত্রীদের। শীত মৌসুমের শুরু থেকেই চর জেগে উঠায় পুরো মৌসুম জুড়ে থাকে এমন ভোগান্তি।

এই নৌরুটের লাইন ম্যান শাহজাহান অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর বিআইডব্লিউটিএ বাঁকখালীর মোহনা ড্রেজিং করার কথা থাকলেও চলতি বছরে ড্রেজিং হয়নি। ফলে বর্ষায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কক্সবাজার শহরের ময়লা আবর্জনায় ভরাট হয়েছে বাঁকখালী। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এই ঘাট থেকে নিয়মিত রাজস্ব আদায় করলেও নদী ড্রেজিং ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় কোন উদ্যোগ নেয় না।

৬ নম্বর জেটি ঘাটে অবসর সময় পার করা স্পীড বোট চালক জাফর জানান, এই নৌরুটে নিয়মিত ১৫০টি স্পীড ও ড্যানিশ বোট চলাচল করলেও চর জেগে উঠায় নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে প্রায়ই। ফলে একটি স্পীড ভোট প্রতিদিন দুই হাজার টাকার লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গেল কয়েকদিন ধরে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার ও নৌযান চালকরা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে বার বার বলার পরও তারা কোন সিদ্ধান্তই নিচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় মোজাম্মেল হকের বড় ছেলে জেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদের দখলে আছে বাঁকখালীর ৩ একর প্যারাবন। রাশেদ আ.লীগের প্রভাব খাটিয়ে দখলকৃত এই প্যারাবন রক্ষায় বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে যোগসাজশে বন্ধ রেখেছিল বাঁকখালী নদী ড্রেজিং। ফলে প্রতিবছর শীত মৌসুমে ভোগান্তিতে পড়তে হয় এই রুটের ৩ লক্ষাধিক যাত্রীর।

মহেশখালীর বাসিন্দা সংবাদকর্মী এস এম রুবেল অভিযোগ করে বলেন, ‘অভিভাবকহীন পড়ে আছে ৬ নম্বর জেটি ঘাট। ঘাটে প্রবেশের সময় টোল নেওয়া হচ্ছে। বিনিময়ে কর্তৃপক্ষ কিছুই দিচ্ছে না এই রুটের যাত্রীদের। বিআইডব্লিউটিএ এর উদাসীনতায় তারা এই নদী ড্রেজিং করছে না।” মহেশখালীর ৫ লক্ষাধিক মানুষ ও চালকদের সুবিধার কথা বিবেচনায় দ্রুত নদী খননের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান মহেশখালীর এই বাসিন্দা।

এই বিষয়ে জানতে বিআইডব্লিউটিএ এর সহকারী পরিচালক (বন্দর) মোঃ কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে জেটি ঘাটে চর জেগে উঠার বিষয়টি অবগত আছি। ড্রেজার মেশিন নারায়ণগঞ্জ থাকায় বাঁকখালী নদীর এই ঘাটে ড্রেজিং করা সম্ভব হচ্ছে না। সাগর বৈরী থাকায় ড্রেজার বটোটি চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কক্সবাজার এসে দ্রুত সময়ে নদী খননের আশ্বাস দেন বিআইডব্লিউটিএ’র এই কর্মকর্তা।

এসএস

Wordbridge School
Link copied!