• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ২৮, ২০২৪, ১১:২৪ এএম
নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

ঢাকা:  যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দুজন পুলিশের করা গুলিতে এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। নিহত ওই তরুণের নাম উইন রোজারিও (১৯)। তার পরিবার দশ বছর আগে বাংলাদেশ ছেড়ে যায়। নিহত ওই তরুণ মানসিক রোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯ বছর বয়সী এক তরুণকে নিউইয়র্কে বুধবার তার কুইন্সের বাড়িতে পুলিশ মারাত্মকভাবে গুলি করে হত্যা করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নিহত ওই তরুণ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলেন এবং গুলিতে নিহত হওয়ার আগে সাহায্যের জন্য ৯১১ নম্বরে ফোন করেছিলেন।

কর্মকর্তারা বলেছেন, উইন রোজারিও নামের ওই তরুণ এক জোড়া কাঁচি দিয়ে পুলিশ অফিসারদের দিয়ে তেড়ে যান এবং এরপরই একপর্যায়ে কর্মকর্তারা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, কিন্তু নিহত তরুণের ভাই এই গুলি চালানোর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং তিনি ঘটনার পুলিশি বিবরণের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, তার মা তার ছেলেকে আটকাচ্ছিলেন এবং তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, পুলিশ অফিসারদের তাদের বন্দুক থেকে গুলি করার দরকার ছিল না।

এদিকে পুলিশ গুলি চালানোর পরপরই উইন রোজারিওকে মৃত ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওজোন পার্কের ১০৩ তম স্ট্রিটে তার পরিবারের দ্বিতীয় তলার অ্যাপার্টমেন্টে এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পুলিশ ডিপার্টমেন্টের টহল প্রধান জন চেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, দুজন অফিসার মানসিক যন্ত্রণায় থাকা এক ব্যক্তি সম্পর্কে ৯১১ নম্বরে ফোনকলের প্রতিক্রিয়ায় অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার পরে গুলি চালানোর এই ঘটনা ঘটে। তিনি বলেছেন, সেখানে পরিস্থিতি ‘বেশ উত্তেজনাপূর্ণ, বিশৃঙ্খল এবং বিপজ্জনক ছিল। পুলিশ মনে করছে, নিহত রোজারিও নিজেই ৯১১ নম্বরে কল করেছিলেন।

চিফ চেল বলেছেন, অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার পর অফিসাররা রোজারিওকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি একটি ড্রয়ার থেকে কাঁচি বের করে অফিসারদের দিকে ধেয়ে আসেন। পরে উভয় অফিসারই রোজারিওর ওপর টেজারের মাধ্যমে গুলি করেন এবং তাকে পরাস্ত করা হয়।

জন চেল আরও বলেন, ‘কিন্তু তার মা ছেলেকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু এটি করতে গিয়ে তিনি ঘটনাক্রমে রোজারিওর শরীর থেকে টেজার সরিয়ে দেন। আর সেই সময়ে রোজারিও কাঁচি তুলে আবার অফিসারদের দিকে তেড়ে আসেন।’

চেল বলেন, ‘এই পরিস্থিতেতে আত্মরক্ষা করার জন্য তাদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।’

অবশ্য রোজারিওকে কতবার গুলি করা হয়েছে তা তিনি বলেননি। যদিও রোজারিওর পরিবার বলেছে, তাকে ছয়বার গুলি করা হয়েছে। আর এই পুরো ঘটনাটি পুলিশ অফিসারদের শরীরে লাগানো ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছে বলে জানান চেল। যদিও ফুটেজটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, রোজারিওর ১৭ বছর বয়সী ভাই উশতো রোজারিও এক সাক্ষাৎকারে পুলিশি এই বর্ণনার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, তার মা এনকাউন্টারের পুরো সময়জুড়ে তার ভাইকে তার কোলে ধরে রেখেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমার মা যখন তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন, তখন তারা তাকে টেজার দিয়ে গুলি করে। টেজার দিয়ে গুলি করার পরও আমার ভাই নিচে পড়ে যাননি। তাই একজন পুলিশ বন্দুক বের করে তাকে গুলি করে এবং সেসময়ও আমার মা তাকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন।’

তিনি বলেন, এভাবে গুলি করা ছিল অপ্রয়োজনীয়। উশতো রোজারিও বলেন, ‘প্রথমত, তার বিরুদ্ধে দুজন পুলিশ অফিসার সেখানে ছিলেন। এবং আমার মা আগে থেকেই তাকে ধরে রেখেছিলেন, তাই তিনি সত্যিই কিছু করতে পারতেন না।’ তিনি আরও বলেছেন: ‘আমি মনে করি না কেবল একটি কাঁচি দুজন পুলিশ অফিসারের জন্য হুমকি ছিল।’

উইনের স্বপ্ন ছিল মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগদান করা। তবে গ্রিন কার্ড পেতে বিলম্বের কারণে তার সেই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়।

এআর

Wordbridge School
Link copied!