• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেতন বৈষম্য ও নতুন পে-স্কেলের দাবীতে একাট্টা হচ্ছে সরকারি কর্মচারীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৩, ২০২১, ০৪:০৪ পিএম
বেতন বৈষম্য ও নতুন পে-স্কেলের দাবীতে একাট্টা হচ্ছে সরকারি কর্মচারীরা

ঢাকা: বেতন বৈষম্য দুর করে নতুন পে-স্কেলসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে একাট্টা হচ্ছে সরকারি কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠন। তারা মাঠে নামার প্রস্তুতি হিসেবে সাংগঠনিক বৈঠক, জনমত সৃষ্টি ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করছে। এসব সংগঠনের বেশিরভাগ দাবিই একই রকম। নতুন পে-স্কেল ঘোষণা, বেতন বৈষম্য কমানো, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ফিরিয়ে দেওয়াসহ আরও কিছু দাবি নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এসব সংগঠনের বেশিরভাগের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দল সমর্থকরা থাকলেও দাবির বিষয়ে প্রায় সব শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যাপক সমর্থন রয়েছে বলে জানা গেছে।

আরোও পড়ুন : প্রাথমিকের নবনিযুক্ত শিক্ষকদের নতুন বার্তা দিলেন গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

সম্প্রতি সরকারের সংস্থাগুলোর বিভিন্ন দপ্তরে বৈঠক করেছেন কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, ২০১৫ সালে যে পে-কমিশন গঠন করা হয়েছিল তার লক্ষ্য ছিল স্থায়ী পে-কমিশন গঠন করা। কিন্তু সেই ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই। হয়তো সরকার সেই জায়গা থেকে সরে এসেছে। তখন কথা ছিল বাজারদর বাড়লে স্থায়ী পে-কমিশন বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করবে এবং সরকার তা আমলে নেবে। বাজারদর কমলে ভাতা কমে যাওয়ার কথা ছিল। 

২০১৫ সালের পে-কমিশনের পর পাঁচ বছর পার হতে চলেছে। নতুন পে-কমিশন গঠনের বিষয়ে এখনো কোনো কমিটি হয়নি। কমিটি গঠন করার পর আরও দেড় থেকে দুই বছর লাগে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করতে। কিন্তু গত কয়েক বছরে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদর বেড়েই চলেছে। সকালে একটি পণ্যের যে দাম থাকছে বিকেলে তা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের প্রাত্যহিক ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারিদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

সরকারি কর্মচারীদের দাবি দাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ ৯ দফা দাবিতে প্রচার চালাচ্ছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে দ্রুত নবম পে-কমিশন গঠন করে বেতন বৈষম্য নিরসন করা। পে-কমিশন গঠনের আগে জীবনযাত্রার মান ও আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখার জন্য তিন থেকে আটটি স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট অথবা ৪০ শতাংশ মহার্ঘভাতা দিতে হবে। টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ফিরিয়ে আনা অন্যতম দাবি। সচিবালয়ের মতো পদ ও গ্রেড চায় সচিবালয়ের বাইরের কর্মচারীরা। বর্তমানে বেতনের ২০টি গ্রেড রয়েছে। এ গ্রেড কমিয়ে ১০টি গ্রেড করার দাবি জানিয়েছে তারা। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় দেশে ১০টি গ্রেড ছিল। কর্মচারীরা সেই গ্রেডেই ফিরে যেতে চায়। ১১ থেকে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বেসিকের শতভাগ ও স্বল্পমূল্যে রেশন চায় কর্মচারীরা। একই গ্রেডের কর্মচারীদের ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে। ব্লক পদে পদোন্নতির সুযোগ দিয়ে সব পদোন্নতির ক্ষেত্রে নিয়োগবিধি একমুখীকরণ করা অন্যতম দাবি। কমন নিয়োগবিধিতে পদসংখ্যা বাড়ানোর দাবিও রয়েছে। শতভাগ পেনশন আগের মতো বহাল এবং পেনশনযোগ্য চাকরিকাল ৫ থেকে ২৫ বছরের জায়গায় ৫ থেকে ২০ বছর করার দাবি রয়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলভাতা, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ঝুঁকিভাতা চালু করতে চায় তারা। চিকিৎসা, শিক্ষা ও যাতায়াত ভাতা বাস্তবসম্মতভাবে পুনর্নির্ধারণ করার জন্য তাদের দাবি রয়েছে। আউটসোর্সিং নিয়োগ বাতিল করাসহ চাকরি স্থায়ীকরণ, উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবি রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ এর আহবায়ক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালের ১ জুলাই কার্যকর হয়েছে অষ্টম পে-স্কেল। অষ্টম বেতন কমিশনের যে সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে তাতে বৈষম্য রয়ে গেছে। ১ গ্রেডের মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা। ১০ গ্রেডের মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা। এখানে পার্থক্য হচ্ছে ৬২ হাজার টাকা। ১১তম গ্রেডের মূল বেতন হচ্ছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আর ২০তম গ্রেডের বেতন ৮ হাজার ২৫০ টাকা। এখানে মূল বেতনের পার্থক্য ৪ হাজার ২৫০ টাকা। এই ৪ হাজার ২৫০ টাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে ১০টি গ্রেডে অর্থাৎ ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের মধ্যে। এখানে এক থেকে অন্য গ্রেডের বেতনের পার্থক্য কোনোটি ২০০ টাকা আবার কোনোটাতে ৩০০ টাকা। অন্যদিকে ১০ থেকে নবম গ্রেডের পার্থক্য ৬ হাজার টাকা। এভাবে ক্রমান্বয়ে ওপরের দিকে পার্থক্য বেড়েছে। আর নিচের দিকে কমেছে।

সোনালীনিউজ/এসআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!