• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ছয়বার ও গ্যাসের চারবার


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১২, ২০১৯, ০২:১২ পিএম
১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ছয়বার ও গ্যাসের চারবার

ঢাকা : বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিগত ১০ বছরে ছয়বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া গৃহস্থালি খাতে চারবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিদ্যুতের দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

সোমবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এ কথা জানান।

বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুতের গড় চাহিদা প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট। ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ দেশে বিদ্যুতের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট। ফলে দেশে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ‘সবার জন্য বিদ্যুৎ’ সুবিধা ও ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়েছে। মোট ১৫ হাজার ৯৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৪৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এ ছাড়া মোট ৩ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।

এর বাইরে মোট ১ হাজার ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রম চালু হবে।

অন্যদিকে মোট ১৯ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারতের দুটি জায়গা থেকে ১ হাজার ৮৩৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ আমদানি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যা ২০২১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে শুরু হবে।

তিনি আরো জানান, এসবের বাইরেও পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরমাণু শক্তিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ আমদানি কার্যক্রম সম্প্রসারণের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।

বর্তমানে (২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ৬.০১ টাকা। পাশাপাশি বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিগত ১০ বছরে ছয়বার (২০১১, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৭ সাল) বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে তৃতীয় মেয়াদে এবং এই পর্যন্ত অর্থাৎ ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গৃহস্থালি খাতে চারবার গ্যাসের দাম বেড়েছে।

এ ছাড়া শিল্প ও ক্যাপটিভ পাওয়ার, চা ও বাণিজ্যিক খাতে পাঁচবার সিএনজি গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১ জুলাই তারিখ দুই বছর পর সব শ্রেণির জন্য গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের দাম কমানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।  

তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট। তবে গ্রিডভিত্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৯ হাজার ৪২৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে সরকারি খাতে মোট ৯ হাজার ৭৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৪টি ও বেসরকারি খাতে ৮ হাজার ৫২৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে এবং এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে।

বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ছিল ৬ দশমিক ২৫ টাকা এবং গড় বাল্ক বিক্রয় ছিল ৪ দশমিক ৮২ টাকা। বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় কিছুটা হ্রাস পেলেও বিক্রয়মূল্যের চেয়ে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যে অসামঞ্জস্যতার কারণে সরকার বিদ্যুৎ খাতে প্রায় সাত হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা বাজেটারি সাপোর্ট দিয়েছে। ফলে বিদ্যুতের মূল্য কমানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!