• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

জমির নামজারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জেনে নিন কিভাবে করবেন


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫, ০১:২০ পিএম
জমির নামজারি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, জেনে নিন কিভাবে করবেন

ফাইল ছবি

ঢাকা: খুব সহজে এবং ঝামেলামুক্তভাবে জমির নামজারি সম্পন্ন করতে যুগান্তকারী তিনটি পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় বলেছে, নতুন এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে নামজারি হবে আগের চেয়ে দ্রুত, সহজ ও সম্পূর্ণ স্বচ্ছ; ফলে ঘুষের লেনদেন ও অনিয়মের সুযোগ কার্যত শূন্যে নামিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।

সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপর্যায়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য ‘ভূমি সেবায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা’। 

প্রথম পদক্ষেপ: নির্দিষ্ট নথি জমা বাধ্যতামূলক
নামজারি আবেদন এখন থেকে হবে সম্পূর্ণ নথিভিত্তিক। জমির রেজিস্ট্রিকৃত দলিল, পূর্ব মালিকের যাচাইযোগ্য কাগজপত্র, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ও দুই কপি ছবি জমা দেয়া বাধ্যতামূলক হবে। নথি অনুপস্থিত থাকলে আবেদন বাতিল হবে। তবে ভুল বা অসম্পূর্ণ নথি থাকলে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে ঘাটতি পূরণ হলেই আবেদন অনুমোদিত হবে।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ: ওয়ারিশ সম্পত্তিতে কড়া নিয়ন্ত্রণ
ওয়ারিশদের মধ্যে যদি সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে কোনো মতবিরোধ থাকে, তাহলে কেউ এককভাবে নামজারি করতে পারবেন না। বণ্টন দলিল ছাড়া নামজারি করলে তা অবৈধ ধরা হবে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বণ্টন দলিল ছাড়া হলেও প্রতিটি ওয়ারিশ নিজ নামে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করে যৌথ খতিয়ানের আবেদন করতে পারবেন। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ বা সিটি কর্পোরেশন থেকে সনদ নিয়ে জমি অফিসে আবেদন করলে ভূমি কমিশনার যৌথ খতিয়ান ঘোষণা করবেন, যাতে প্রত্যেকের মালিকানার অংশের সঠিক বিবরণ থাকবে।

তৃতীয় পদক্ষেপ: নামজারি এখন অনলাইনে, এক ক্লিকেই মিলবে সেবা
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই পর্যন্ত ২১টি উপজেলায় নামজারির অটোমেশন পদ্ধতি চালু হয়েছে। শিগগিরই এটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। নতুন ব্যবস্থায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিল রেজিস্ট্রেশনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভূমি অফিসে একটি কপি পাঠানো হবে। যাচাই-বাছাই শেষে ‘নো অবজেকশন’ রিপোর্ট পাঠানো হলে নতুন মালিকের নামে নামজারি সম্পন্ন হবে।

এই প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ অনলাইনে ট্র্যাক করা যাবে। আবেদনকারীর মোবাইলে বার্তা যাবে, আবেদন কোন অবস্থায় আছে তা জানানো হবে। পাশাপাশি তিনটি সেবা একসঙ্গে পাওয়া যাবে—দলিল রেজিস্ট্রেশন, খতিয়ান সংশোধন এবং অনলাইনে ডকুমেন্ট সংযুক্তকরণ। প্রতিটি ভূমি মালিককে দেওয়া হবে অনলাইন আইডি এবং ডিজিটাল মালিকানা সনদ, যাতে কিউআর কোড বা ওয়েবসাইট লিংক দিয়ে যে কেউ জমির প্রকৃত মালিক ও সংশ্লিষ্ট দলিল যাচাই করতে পারবে।

দীর্ঘদিনের নামজারি জটিলতার অবসান ঘটাতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই তিনটি পদক্ষেপকে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দ্রুত তাদের দলিল ও প্রমাণপত্র হালনাগাদ করতে এবং নতুন সিস্টেমে আবেদন সম্পন্ন করতে। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের ভূমি ব্যবস্থায় শুরু হচ্ছে এক নতুন যুগ, যেখানে থাকবে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং নিশ্চিন্ত মালিকানার নিশ্চয়তা।

পিএস

Wordbridge School
Link copied!