• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

হামজার পর আরও কয়েকজন আসছেন বাংলাদেশের ফুটবলে


ক্রীড়া ডেস্ক এপ্রিল ৩, ২০২৫, ১১:৩৮ এএম
হামজার পর আরও কয়েকজন আসছেন বাংলাদেশের ফুটবলে

ঢাকা: প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া জামালের।

এরপর জাতীয় দলে আসেন ফিনল্যান্ডে জন্ম নেওয়া তারিক কাজী। জাতীয় দলে তাদের অন্তর্ভুক্তি উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছে সমর্থকদের। তবে সর্বশেষ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হামজা চৌধুরীর লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চাপানোটা অতীতের সব উচ্ছ্বাসই ছাপিয়ে গেছে। দেশব্যাপী তোলা আলোড়ন পৌঁছে গেছে বিশ্ব ফুটবলেও।

হামজা আসার আগে থেকেই অবশ্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বা প্রবাসী ফুটবলাররা বিভিন্নভাবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছিলেন। 

ইচ্ছা প্রকাশ করছিলেন বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার। গত ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে হামজার স্মরণীয় অভিষেকের পর এই আগ্রহ আরও বেড়েছে।

বাংলাদেশের হয়ে খেলতে এখন পর্যন্ত নতুন করে ১৩টি দেশে বসবাস করা ৩২ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে কাল জানিয়েছেন বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম। সবচেয়ে বেশি ১২ জন ইংল্যান্ডের।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, পর্তুগাল, জ্যামাইকা, সোমালিয়া, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশের ফুটবলারও আছেন তালিকায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন ইংল্যান্ডের করিম হাসান স্মিথ, আশিকুর রহমান, ইলমান মতিন, হারুন সালাহ, নাবিল রহমান; ফ্রান্সের ফারহান মাহমুদ, কানাডার নাবিদ আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্রের আমির সামি।

এই তালিকার বাইরে বয়সভিত্তিক দলের জন্য আলোচনায় আছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই যমজ ভাই রোনান ও ডেকলান সুলিভান। তাদের নানি সুলতানা আলম বাংলাদেশি, সেই সূত্রে মা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। বাবা যুক্তরাষ্ট্রের, নানা জার্মান। এই দুজন চাইলে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার জন্য আবেদন করতে পারেন। তাদের বাবা ব্রেন্ডান সুলিভান বাফুফের কাছে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। তবে তাদের চার ভাইয়ের সবার বড় কুইন ও সবার ছোট কাভান সুলিভান যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে আসবেন না, এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

এসব তথ্য জানিয়ে ফাহাদ করিম বলছেন, ‘জুনের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় আমরা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের তিন দিনের ট্রায়াল নেব। যারাই ইচ্ছা প্রকাশ করবে বাংলাদেশের হয়ে খেলার, আমরা তাদেরই ট্রায়াল নেব। ট্রায়াল দেখে বুঝতে পারব কারা কোথায় খেলার যোগ্যতা রাখে। ট্রায়ালের মাধ্যমেই তাদের সুযোগ পেতে হবে।’

ট্রায়াল থেকে কাউকে পছন্দ হলে বয়সভিত্তিক দলের জন্য বিবেচনা করা হবে, এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা এমনই। বাফুফের সহসভাপতি বলেছেন, ‘এই ট্রায়াল মূলত বয়সভিত্তিক দলের জন্য। সামনে অনেক বয়সভিত্তিক আন্তর্জাতিক খেলা আছে। এখান থেকে ২/৩ জন পেলেও হয়তো আমাদের বয়সভিত্তিক দল শক্তিশালী হবে।’

ট্রায়ালের খেলোয়াড় খোঁজার জন্য বাফুফের হয়ে কাজ করছেন ডেনমার্কে বসবাসরত বাংলাদেশের ফুটবল-স্বেচ্ছাসেবী ৩৭ বছর বয়সী সাকিব মাহমুদ। কীভাবে কাজ করছেন, তা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল দেখে বাংলাদেশি বর্নস বিভিন্ন ফুটবলারকে খুঁজে নিই আমি। প্রক্রিয়াটা বাফুফের গত কমিটির সময় শুরু হয়। বর্তমানে অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার বা তাদের অভিভাবকেরা নিজ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’

এই ফুটবলারদের বয়স ১৬-২৪ এর মধ্যে। শুধু একজনের ২৯ বছর। ঢাকায় ২৫ জুন প্রথম দিনের ট্রায়াল হবে জানিয়ে সাকিব বলছেন, ‘বাফুফেকে যে ৩২ জনের তালিকা দিয়েছি, তা থেকে ৫-৬ জনকে বাদ দিয়েছি আমি নিজেই। তবে সর্বশেষ যোগ হয়েছে আরও ৮-৯ জন। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে আমার হাতে আছে ৩৫ জন ফুটবলার। আগামী জুন পর্যন্ত সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। ট্রায়ালটা হতে পারে ৩০-৩৫ জনের।’

সাকিব জানান, এরই মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশে এসেছেন। সিরি ‘ডি’তে খেলা আবদুল কাদির, ইংল্যান্ডের এলমান মার্টিন এসেছেন সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ট্রায়াল দিতে। আজ ঢাকায় ধানমন্ডি ক্লাব মাঠে তাদের ট্রায়াল হওয়ার কথা। কানাডা থেকে এসেছেন ২০ বছর বয়সী ফারহান মিরাজ।

তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জন্য আপাতত বিবেচনায় আছেন শুধু একজন। কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব কালাভরি এফসির মিডফিল্ডার সামিত সোম ২০১৬ সালে কানাডার অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৭টি ও ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন ৪টি ম্যাচ। ২০২০ সালে কানাডার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেন দুটি ম্যাচ। বাফুফে তাই জাতীয় দলে সামিতকে পেতে আগ্রহী।

এ বিষয়ে ফাহাদ করিম দিয়েছেন সর্বশেষ অগ্রগতির খবর, ‘সামিত আমাদের কাছে কিছু বিষয় জানতে চেয়েছেন। আমরা জানিয়ে দিয়েছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে তিনি দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছেন। তিনি “হ্যাঁ” বললেই আমরা দ্রুত তার পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করব।’

২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সামিতের জন্ম কানাডায়। মা-বাবা দুজনই বাংলাদেশি। ফলে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে খুব বেশি সমস্যা হবে না মনে করছে বাফুফে। তবে সামিত কানাডার জাতীয় দলের হয়ে খেলায় ফিফার অনুমতির ব্যাপার আছে। গোটা প্রক্রিয়াটা সময়সাপেক্ষ।

এআর

Wordbridge School
Link copied!