• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেল গ্রামের পর গ্রাম, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ


জেলা প্রতিনিধি জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৮:০০ পিএম
বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেল গ্রামের পর গ্রাম, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন জেলায় বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। ৭টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গাইবান্ধা শহরসহ দুই শতাধিক গ্রাম। ধসে পড়েছে উত্তরবঙ্গ শিক্ষাসেবাকেন্দ্রের কার্যালয়।  গাইবান্ধার বাদিয়াখালি রেল স্টেশন থেকে ত্রিমোহনী রেল স্টেশন পর্যন্ত রেল লাইনের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় শান্তাহার-লালমনিহাট রেল রুটে ট্রেন চলাচলা বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে গাইবান্ধা সঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে রংপুর এক্সপ্রেস ও লালমনি এক্সপ্রেস পার্বতীপুর হয়ে বিকল্প রেল রুটে ঢাকায় যাতায়াত করছে। 

বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে এগারোটা এই রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়। 

এদিকে, গাইবান্ধা সদরের কাজলঢোপ এলাকায় ঘাঘট নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১০০ মি. অংশ ধসে যাওয়ায় গাইবান্ধা -সাদুল্লাপুর সড়কের উপর দিয়ে কাজলঢোপ, কদমের তল, ব্রিজ বাজার এলাকায় বন্যার পানি প্রবল স্রোতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এই সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়ে। অপরদিকে, গাইবান্ধার ফারাজিপাড়া এলাকায় গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের কিছু অংশ ডুবে গেছে। ফলে সড়কের কদমতলী নামক স্থানের একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ার উপক্রম হওয়ায় বুধবার ভোর থেকে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কের পোড়াবাড়ী এলকায় বন্যার পানির তোড়ে সাঘাটা উপজেলার পোড়াবাড়ী এলাকায় ২০০ ফুট পাকা সড়ক ধসে গাইবান্ধার সাথে সাঘাটার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে, নওগাঁয় আত্রাই নদী রক্ষা বাঁধের ২শ ফিট ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ২ শতাধিক গ্রাম। যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে জামালপুর ও বগুড়ার নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে গেছে। রেললাইনে পানি ওঠায় দেওয়ানগঞ্জে ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বেড়েই চলছে নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বাড়ছে জনদুর্ভোগ। গাইবান্ধায় ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ৭টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শহরের ডেভিড কোম্পানিপাড়া, কুটিপাড়া, জুম্মাপাড়া ও পূর্বপাড়াসহ দুই শতাধিক গ্রাম। ভেসে গেছে অন্তত ৩০ হাজার কাঁচা বাড়িঘর। পানিবন্দি হয়ে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে নবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় চারলাখ মানুষ।

হুমকির মুখে রয়েছে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের কদমতলী ব্রীজসহ ৭ টি ব্রিজ ও কালভার্ট। কদমতলী এলাকায় উত্তরবঙ্গ শিক্ষা সেবাকেন্দ্রের কার্যালয় ধসে পড়েছে। বাডিয়াখালি ও শ্রীমোহিনী এলাকায় রেললাইন তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে লালমনিরহাট-গাইবান্ধা-ঢাকা রুটের ট্রেন চলাচল। নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর বাধের প্রায় ৩শ' ফিট ভেঙে প্লাবিত হয়েছে প্রায় দুশো গ্রাম। বাড়িঘর, পুকুর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পরিবার পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা।

জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে ইসলামপুর পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ী-রাজিবপুর অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে উপজেলার প্রায় দু'শো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বগুড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। সরকারি সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ তাদের। সারিয়াকান্দির পর এবার ধুনট উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বানভাসী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধে।

এদিকে, পদ্মার পানি বাড়তে থাকায় রাজবাড়ীতে নতুন করে দেখা দিয়েছে ভাঙন। জেলার নদী তীরের ১৫ টি পয়েন্টে শতাধিক বসত-ভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি শিগগিরই উঁচু ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নদী পাড়ের মানুষ।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!