• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভাবমূর্তি উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা শুরু


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৮, ২০১৬, ০৯:৫২ পিএম
ভাবমূর্তি উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিউনিকেশন্স বিভাগের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পরিচ্ছন্নতা বিভাগের পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাসকে পুলিশি হয়রানির খবরে সারা দেশে নিন্দার ঝড় বইছে। এ নিয়ে চরম ইমেজ সংকটে পড়েছে পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্ট। এবার আস্থা ফেরাতে চলমান নিন্দার ঝড়ের বিপরীতে হৃদয়গ্রাহী কিছু বক্তব্য দিয়ে গণমাধ্যমে একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে পুলিশের কয়েকজন সদস্যের আচরণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে শান্তি বজায় রাখতে ও সমাজে বিপর্যয় ঠেকাতে পুলিশের অবদানের কথা তুলে ধরে পুলিশের বক্তব্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের ১ লাখ ৬৯ হাজার সদস্য রাতদিন মানুষের জীবন, সম্পদ, সম্মান, চলাফেরার নিরাপত্তার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছেন। সমাজ জীবনে শৃঙ্খলা, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ জীবনবাজী রেখে কাজ করছে। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে ২০১৫ সালেই সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচ জন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। মানুষকে সেবা দিতে গিয়ে এমন ত্যাগ পুলিশ ছাড়া অন্য পেশায় এদেশে বিরল।
সারা পৃথিবীর পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরে আরো বলা হয়েছে, দিনে হোক, রাতে হোক সন্দেহভাজন স্থান এবং ব্যক্তিকে তল্লাশি করে সারা পৃথিবীর পুলিশ। এ কাজটি করার জন্য পুলিশকে যে আইনগত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে- সেটাও মানুষের নিরাপত্তার জন্যই। সেই রোমান সভ্যতা থেকে শুরু করে আজকের পৃথিবীর সবখানেই পুলিশ এই তল্লাশির কাজটি করে থাকে। এ কাজগুলো যদি না করা হয়, তাহলে সমাজ বিপর্যস্ত হয়ে যাবার আশঙ্কা বিদ্যমান। সমাজের বৃহত্তর মানুষের নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেটার ক্ষেত্রে আইনগত পদ্ধতি আছে। ব্যক্তির স্বাধীন স্বত্ত্বার ওপর কতটুকু হস্তক্ষেপ করা যাবে সেই বিধিবিধান সম্পর্কে পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে প্রশিক্ষিত করা হয়ে থাকে।
কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়লে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় উল্লেখ করে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের অধিকাংশ সদস্যই আইনগতভাবে কাজ করে। তবে বিচ্যুত হয় কেউ কেউ। কোনো ব্যক্তির বিচ্যুতিকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেয় না বাংলাদেশ পুলিশ। যারা অপরাধে জড়ায় তাদের পুলিশ হিসেবে নয়, অপরাধী হিসেবে এদেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাংলাদেশ পুলিশ। বরখাস্ত, চাকুরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে বের করে দেয়া হয় পুলিশ বিভাগ থেকে। অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী ফৌজদারি আদালতেও বিচার করা হয় তাদের। সেক্ষেত্রেও সবধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। ২০১৫ সালে কনস্টবল থেকে সাব-ইন্সপেক্টর পর্যন্ত ৭৬ জনকে বরখাস্ত/ চাকুরিচ্যুত/ বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। আলোচ্য দু‘জনের ক্ষেত্রেও যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
কোনো ব্যক্তির স্খলন বা বিচ্যুতির জন্য পুলিশ বিভাগকে সামগ্রিকভাবে দায়ী করা অসমীচীন এবং অসঙ্গত উল্লেখ করে পুলিশ আরো বলছে, আমরা বলতে চাই যে, সততা, অসততা মানুষের ব্যক্তিগত গুণ বা দোষ। যে কারণে সমাজের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পেশায় থেকেও কোনো কোনো ব্যক্তি অপরাধে জড়িয়ে যায়। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত মানুষও সততার পরম উৎকর্ষতা দেখতে পারে, আবার প্রাসাদের বাসিন্দারাও অসততায় জড়িয়ে যায়। সাংগঠনিকভাবে, নীতিগতভাবে বাংলাদেশ পুলিশ কোনো অপরাধ বা অপরাধীকে সমর্থন করে না। বরং অপরাধের শাস্তিটা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সবসময়ই তৎপর।

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!