অবশেষে মৃত্যুর কাছে হারল সেই গৃহবধূ!

বাগেরহাট: টানা ছয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে হেরে গেল নিজের গায়ে কেরেসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী আগুনে দগ্ধ কমলা নূরী (২০) নামে সেই গৃহবধূ!

শুক্রবার (৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

নূরী জেলার শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামের ইলিয়াস হাওলাদারে স্ত্রী এক সন্তানের জননী।

এরআগে ৩ মার্চ (শনিবার) সকালে  নূরী স্বামী ও শ্বাশুড়ির অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেয়ে নিজ শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
এতে ওই গৃহবধূর শরীরের প্রায় ৬০ ভাগ মারাত্মক দগ্ধ হয়। ওই দিন তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবিরুল ইসলাম ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার সমাদ্দারের আর্থিক সহায়তায় হতদরিদ্র নূরীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

পরিবার ও এলাকাবাসীর সূত্র জানায়, উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের মৃত মোক্তার খলিফার মেয়ে নূরী এক বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে একই উপজেলার বকুলতলা গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মো. ইলিয়াস হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে আরমান নামের তিন মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

নূরীর ভাই আল-আমিন বলেন, ইলিয়াস প্রেম করে বিয়ে করায় তার মা, বাবা ও পরিবারের লোকেরা নূরীকে মেনে নিতে পারেনি। বিভিন্ন সময় স্বামী ও শ্বাশুড়ি মিলে নানাভাবে তার ওপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন চালাত। এনিয়ে বহুবার স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্যরা সালিস-বৈঠক করলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি। স্বামী ও শ্বাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই তার বোন গায়ে আগুন দিয়েছে।

স্থানীয় বকুলতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, ইলিয়াস এবং তার মা তাসলিমা বেগম খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তারা দু’জনে মিলে নূরীকে মারধরসহ নানাভাবে নির্যাতন করতো। তিন-চার মাস পূর্বে নূরীকে কারেন্ট শক দেয় ইলিয়াস। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিস করা হয়েছে।

শরণখোলা থানার ওসি মো. কবিরুল ইসলাম জানান, নূরীর মৃত্যুর খবর তার স্বজনদের কাছে শুনেছেন এবং নিহতের পরিবারটিকে আইনী সহায়তা দেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম