• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক রুটে বিমানের ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয়


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২২, ২০১৬, ০৩:৫০ পিএম
আন্তর্জাতিক রুটে বিমানের ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয়

আন্তর্জাতিক রুটে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাংলাদেশ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সংস্থাটির ১৪টি উড়োজাহাজের মধ্যে ৪টি বিকল। ইতিমধ্যে বসে গেছে তিনটি বোয়িংসহ একটি এয়ারবাস। তাছাড়া মিসর থেকে আনা একটি বোয়িং চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।

আর দুটি দিয়ে চালানো হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট। ফলে বিমানের ১৫টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট সিডিউলে বিপর্যয় তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিন ধরেই গড়ে ৩টি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বিমানযাত্রীরা। আর চলতি মাসজুড়েই বিমানের সিডিউল বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে। বাংলাদেশ বিমান সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খুব শিগগিরই বাংলাদেশ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহওে একটি এয়ারবাস যুক্ত হতে যাচ্ছে। তাতে সিডিউল বিপর্যয় কিছুটা সহনীয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরে ৭টি রুট ছাড়াও ১৫টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে বাংলাদেশ বিমান তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। 

আর সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের জন্য বিমানবহরে ১৪টি উড়োজাহাজ আছে। তার মধ্যে ৬টি নিজস্ব ও ৮টি লিজ নেয়া। তার মধ্যে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করে এমন ৪টি এয়ারক্রাফট বিকল এবং একটি চলছে খুঁড়িয়ে। ফলে আন্তর্জাতিক রুটে বিমানের সিডিউল ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, বিমানের ফ্লাইট বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে রিয়াদ, দাম্মাম, কুয়েত, মাসকাট ও দুবাইয়ের যাত্রীরা। একই অবস্থা ফিরতি যাত্রীদেরও। যাত্রীদের অভিযোগ- কর্মস্থলে ছুটি মঞ্জুর করানো, দেশে আসার সিডিউল, বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার মাইক্রোবাস ভাড়া সবকিছু চূড়ান্ত করেই প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিমানের টিকিট কিনেন। 

কিন্তু ফ্লাইট সিডিউলি ঠিক না থাকায় এখন ওসব যাত্রীদের সব পরিকল্পনাই লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। কারণ বিমান ছাড়ার স্বল্পসময় আগে জানানো হয়- ফ্লাইট অনিশ্চিত। পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে রুটও। এ নিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের সাথে যাত্রীদের বাকবিতন্ডাও হয়। বাধ্য হয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ অনেক যাত্রীর সিট পরিবর্তন করে অন্য ফ্লাইটে পাঠায়। অথচ এ নিয়ে যাত্রীরা বিমান কর্তৃপক্ষের কোনো সহমর্মিতা পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র আরো জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ফ্লাইট বিপর্যয়ে বিমানের উড়োজাহাজ একদিকে যেমন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে ঢাকা ছাড়ছে, অন্যদিকে। একইভাবে রিয়াদ, দাম্মাম, কুয়েত ও মাসকাট বিমানবন্দর থেকে যেসব ফ্লাইট আগে ঠিক করা ছিল সেগুলোও ঢাকায় পৌঁছতেও দেরি হচ্ছে। 

ফলে যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজনরা বিমানবন্দরে এসে দুর্ভোগে পড়ছেন। কারণ ঢাকার বাইর থেকে মাইক্রোবাস ভাড়া করে বিপুল অংকের টাকা আর্থিক গচ্চা দিচ্ছেন যাত্রীদের স্বজনরা। আর এ ধরনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিমানেরই। কারণ প্রবাসী যাত্রীরা যদি কোনো কারণে এরকম ভোগান্তির মুখে পড়ে তাহলে দ্বিতীয় দফায় তারা আর বিমানের টিকিট করে না। 

তাছাড়া আগামী আগস্ট থেকে শুরু হবে হজ ফ্লাইট। তখন কমপক্ষে দুটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজকে শুধুমাত্র হজ ফ্লাইটের জন্য নির্ধারিত রাখা হবে। কিন্তু বিকল হওয়া বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটি হজের আগে ঠিক না হলে হজের সময়ও সব আন্তর্জাতিক রুটে বড় ধরনের সিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে ফ্লাইট সিডিউল বিপর্যয় প্রসঙ্গে বিমানের পরিচালক প্ল্যানিং বেলায়েত হোসেন বলেন, হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য একটি সুপরিসর বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ লিজ নেয়া হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে লিজ চুক্তি সম্পন্ন হবে। তাতে সিডিউল তেমন কাটছাঁট কিংবা পরিবর্তন করতে হবে না।

একই প্রসঙ্গে বিমান চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল ইনামুল বারী জানান, গত মঙ্গলবার টেকঅফের আগমুহূর্তে বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় সিডিউল কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে বিলম্বের এই খবরটি অগ্রিম যাত্রীদের জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাতে যাত্রীদের ভোগান্তি কম হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!