• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে তিন ‍সুবিধা নিচ্ছে ভারত


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬, ০৯:৫৫ এএম
এক শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে তিন ‍সুবিধা নিচ্ছে ভারত

ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) থেকে ব্যাপক উৎসাহে নামমাত্র এক শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার শর্তে একের পর এক ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ। আপাতদৃষ্টিতে কম সুদের ঋণ মনে হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসলে তা নয়। কেননা এ ঋণ দেয়ার মধ্য দিয়ে তিন ধরনের সুবিধা পাচ্ছে ভারত।

প্রথমত, ১ শতাংশ সুদ তো পাচ্ছেই। দ্বিতীয়ত, শর্ত অনুযায়ী এ ঋণের অর্থে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তার পণ্য ভারত থেকে কিনতে হচ্ছে। ফলে ভারতীয় পণ্য বিক্রির বাজারে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ। তৃতীয়ত, বেশির ভাগ প্রকল্পই আঞ্চলিক যোগাযোগ সংক্রান্ত। ফলে ভারতের সুবিধা জড়িত থাকছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, ভারত এখনও বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে প্রচুর ঋণ নিয়ে থাকে। তারপরও তারা ৩৬টি দেশে ঋণ দেয়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে সম্পর্ক ঠিক রাখা এবং ব্যবসা করা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ গতকাল (২৫ ডিসেম্বর) বলেন, ভারতীয় ঋণকে বলে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট। সুদ এখানে কোনো বিষয় নয়, কম সুদ দেখানো হয় ঋণগ্রহীতাকে আকৃষ্ট করার জন্য। কিন্তু তাদের (ভারত) শর্তানুযায়ী যেসব পণ্য সরবরাহ করে সেগুলোর মানের বিষয়টি প্রশ্নসাপেক্ষ। সব যে খারাপ সরবরাহ করে তা বলছি না। কিন্তু এক্ষেত্রে যারা ঋণ নেয় তাদের কিছু বলার থাকে না। এর মধ্যে মানসম্মত পণ্য পেলে সেটি সৌভাগ্যের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঋণে কম দামে ভালো পণ্য পাওয়া যায় কি না সে বিষয়টি যাচাই করার সুযোগ নেই। তাদের পণ্য বিক্রি করাই থাকে মূল উদ্দেশ্য। সুদ কম মনে হলেও ইফেকটিভ কস্ট কম হবে বলে মনে করি না। একেবারে না নিলেই নয়, এ রকম পরিস্থিতি ছাড়া এ ধরনের সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট যত কম নেয়া যায় বা পরিহার করা যায় ততই ভালো।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ভারতীয় ঋণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নে নির্মাণ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ পণ্য তাদের দেশ থেকে কিনতে হবে। আর সরবরাহ সংক্রান্ত বিষয়ে ৭৫ শতাংশ ভারত থেকে কিনতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে ভারতের চাহিদা ছিল নির্মাণ ও সরবরাহ উভয় ক্ষেত্রেই ৮৫ শতাংশ ক্রয় করার। কিন্তু পরবর্তীকালে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেটি কমিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে। সেই সঙ্গে অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ নিতে গেলে সাধারণত যেসব শর্ত থাকে সেগুলো তো আছেই।

ইআরডির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এ ঋণ ভারতের কোনো দয়া বা মহানুভবতা নয়, এটা এক ধরনের বিনিয়োগ। তবে গ্রান্ট এলিমেন্ট বিবেচনায় এ ঋণকে সফট ঋণ বলা হয়ে থাকে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!