ঢাকা : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছেন, এখনো বাংলাদেশের যে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে বিচার বিভাগ একশো ভাগ ভাল আছে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা ৯০ প্লাস।
বুধবার (২৪ মে) সকালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল শুনানিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চে মামলার শুনানি চলছে। বুধবার সকাল ৯ টা ১০মিনিটের দিকে শুনানি শুরু করে ১০টা ২০মিনিট পযন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছেন। এখন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। বেলা ১১টা থেকে ৩০ মিনিট বিরতি দিয়ে সাড়ে ১১টায় আবারো শুনানি চলছে।
আদালতের ভাবমূর্তি বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কোর্টে যা হচ্ছে তা নিয়ে বিচারপ্রার্থী ও জনগণের একটা গণশুনানি নেন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমানে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা ৯০ ভাগের চেয়ে বেশি। চৌকি আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পযন্ত।
এ পযায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি বাঁশখালীর চৌকি আদালতে গিয়ে দেখেছি। ওখানে যতজন বিচারপ্রার্থী আসে, ডিসি অফিসেও এত লোক আসে না। বাংলাদেশের যে কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বিচার বিভাগ ১০০গুণ ভাল। আপনারাতো প্রধান বিচারপতিকে পঙ্গু করে রাখার......।
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আই এম নট টোটালি হ্যাপি।এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রধান বিচারপতি চেয়েছে যাদের লেখা পড়া আছে, যোগ্যতা আছে, তাদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিতে। কিন্তু দেড় বছরেও নিয়োগ হয়নি। আপনারা যেটা চাচ্ছেন, আপনিও জানেন সবাই জানে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মার্শাল ল’ তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল করা হয়েছে। এটা সংবিধানের বড় লজ্জা। সেখানে রিলিজিয়াস (রাষ্ট্রধর্ম) বিষয়টাও আছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ওখানে কম্প্রোমাইজ করলে এখানে নয় কেন?
শুনানির এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সমস্ত পাণ্ডিত্য আমাদের, আপনাদের। কিন্তু ৭২এর সংবিধানে হাত দিতে পারেন না।
আপিল বিভাগ বলেন,‘জুডিশিয়াল ইমপ্রুভমেন্ট থাকবে না? জুডিশিয়াল রিভিউ থাকবে না? উঠিয়ে দেন। সংবিধানের এ টু জেড আমরা ব্যাখ্যা করবো জনগণের অধিকার প্রশ্নে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে’।
শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি ইংল্যান্ডেরর জুডিশিয়ারি নিয়ে একটি লেখা অ্যাটর্নি জেনারেলকে পড়তে দেন। পড়া শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনি যে লিখিত যুক্তি দিয়েছেন, এ লেখা অনুসারে সেটি না জেনেই ইংল্যান্ডের ব্যাপারে দিয়েছেন। পৃথিবীতে একমাত্র সভ্য দেশ ইংল্যান্ড। অলিখিত সংবিধান পালনে চুল পরিমাণ এদিক সেদিক হয়নি। বেক্সিটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কি চেতনা, কি মানসিকতা’।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,‘আমি আপনার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। ইংল্যান্ড বিদেশিদের লুণ্ঠন করেছে। তাদের সভ্য বলতে পারেন না’।
প্রধান বিচারপতি বলেন,‘লুণ্ঠন অন্য জিনিস। আমেরিকাও লুণ্ঠন করছে’।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,‘তাদের (ইংল্যান্ড) আইনের শাসন ডেভেলপ করেছে- এটা বলতে পারেন’।
প্রধান বিচারপতি বলেন,‘ইয়েস, তারা তাদের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পেরেছে’।এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অন্যদের লুণ্ঠন করে নিজের নাগরিকদের সুরক্ষা দিয়েছে’।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :