• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এবার দুই মন্ত্রীর বাহাস


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১০, ২০১৭, ০২:৪৮ পিএম
এবার দুই মন্ত্রীর বাহাস

ঢাকা : সরকারের দুই মন্ত্রীর মধ্যকার বাহাস জনমনে নতুন কৌতুহলের সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনের আগে মহাজোটের প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর এ বাহাস অনেক প্রশ্নেরও জন্ম দিচ্ছে। জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটানোর পর জবাব এসেছে ক্ষমতাসীন দলের খোদ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষ থেকে। বিষয়টিকে সরকার আমলে না নিলেও আলোচনার টেবিলে বিষয়টি হট কেকে পরিণত হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, জাসদ যদি আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচনে যায়, তার ফল কী হবে- তা ইনু নিজেও জানেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আলোচনা করা ঠিক নয়। উনার যা ক্ষোভ আছে, এটা আমরা দলীয় ফোরামে, সরকারি ফেরামে আলাপ করে নেব। চিন্তার কোনো কারণ নেই।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে নির্বাচন করে তিনটি আসন পায় হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদ। মেয়াদের শেষ দিকে এসে ইনু পান তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপির বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাসদ পায় পাঁচটি আসন। ইনুকে আবারও তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার কুষ্টিয়ায় এক সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, তারা সংখ্যায় বিপুল না হলেও তাদের ছাড়া ‘হাজার বছরেও’ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তিনি বলেন, আপনার ৮০ পয়সা থাকতে পারে। আপনি এক টাকার মালিক না। যতক্ষণ এক টাকা হবেন না, ততক্ষণ ক্ষমতা পাবেন না। আপনি ৮০ পয়সা আর এরশাদ, দিলীপ বড়ুয়া, মেনন আর ইনু মিললে তবেই এক টাকা হবে।
আমরা যদি না থাকি, তাহলে ৮০ পয়সা নিয়ে আপনারা (আ’লীগ) রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরবেন। এক হাজার বছরেও ক্ষমতার মুখ দেখবেন না। সুতরাং ঐক্য করেছি জাতির জন্য, দেশের জন্য, মানুষের জন্য। সেই ঐক্যের ফসল হিসাবে আজ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী।

এরপর গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তন এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ইনু সাহেব অভিমান, ক্ষোভ থেকে বোমা ফাটিয়েছেন। কেন এ অভিমান? উনি নিজেও জানেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন করলে রেজাল্ট কী হবে? আগে করে তো টেস্ট করেছি। আমাদের দলের শরিক, তবে নির্বাচন এক সাথে করব। সরকারের সাথে নির্বাচন করে কিছু আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আÍজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বিতরণ উপলক্ষে টিএসিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছাত্রলীগ।

এদিকে, বুধবার কুষ্টিয়ার সমাবেশে হাসানুল হক ইনু আরো বলেন, জাসদ সন্ত্রাস, মারামারি চায় না, দলবাজি পছন্দ করে না। আমি শান্তি চাই বলে আপনারা এটাকে দুর্বলতা ভাববেন না। জাসদের লাঠি আছে, শক্তি আছে, আমরা যদি মনে করি জাসদের লাঠি যে রাস্তায় যাবে সে রাস্তায় আর কেউ থাকবে না। তিনি বলেন, আমি কিছু বলি না, জাসদের কর্মী ভায়েরা সহ্য করে। আমি আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। অন্য এমপিদের মতো ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি আমদানি করি না। তারা আইন অনুযায়ী চলবেন। আমার কর্মীরা চোর-ডাকাত না।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যের কারণ ব্যাখ্যায় জাসদ সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের নেত্রী আর খালেদা জিয়া রাজাকারের নেত্রী। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের; শেখ হাসিনা মানুষের, খালেদা জিয়া জঙ্গির। তাই আমি দেশের জন্য শেখ হাসিনার সাথে ঐক্য করেছি। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঐক্যবদ্ধভাবে হবে। জাসদ ঐক্যের মর্যাদা রাখবে, আপনারা পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করবেন না। জাসদের কাফেলা চলতেই থাকবে।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা জাসদ সভাপতি মোহাম্মদ শরীফের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাতীয় নারী জোটের সভাপতি আফরোজা হক রিনা, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আনোয়ার, জেলা জাসদ সভাপতি গোলাম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম স্বপন বক্তব্য দেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!