• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এসডিজি বাস্তবায়নে সৃষ্টি হবে ব্যবসার নতুন দিগন্ত


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১, ২০১৭, ০৯:১৪ পিএম
এসডিজি বাস্তবায়নে সৃষ্টি হবে ব্যবসার নতুন দিগন্ত

ঢাকা: এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পরে এসেছে সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোল (এসডিজি) বা টেকসই উন্নয়ন। অর্থনীতির নতুন ধারনায় দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্তসহ একাধিক লক্ষ্য অর্জনে উন্নয়ন হতে হবে দীর্ঘস্থায়ী।  সেই টেকসই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সরকারের সামনে তিনটি খাতে বিরাট চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে ব্যবসার নতুন নতুন খাত তৈরি হবে। অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্র তৈরি হবে, যা টেকসই উন্নয়নকেও নিশ্চিত করবে।

এসডিজি বিষয়ক এক সেমিনারে এই সম্ভাবনার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীরা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ‘এসডিজি থেকে বেসরকারিখাতের  ব্যবসায়িক সম্ভাবনার কৌশল নির্ধারণ’ শীর্ষক এই সেমিনারটির আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম।

ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রাইসওয়াটারহাউজকুপারস-এর তথ্য মতে, সারাবিশ্বে ৭১ শতাংশ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এসডিজিতে সম্পৃক্ত করতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। তিনি আরো বলেন, এসডিজি’র ফলে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, কাগজ ও পাল্প, পানি সংশোধন, খাদ্য বর্জ ব্যবস্থাপনা, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারিখাত ও সরকারের অংশীদারিত্ব হচ্ছে ৭০ ও ৩০ শতাংশ। এজন্য কৌশলপত্র প্রণয়ন কাজ আগামী এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যাংক হতে সরকারের ঋণ গ্রহণ কমে যাওয়া ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সামনে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বিগত কয়েক দশক যাবত আমরা সারা বিশ্বে বৈষম্য ও অর্থনৈতিক অরাজকতা লক্ষ্য করছি। সত্যিকার অর্থে দারিদ্র বিমোচন করতে হলে বর্তমানে ব্যবহৃত উন্নয়নের মডেলগুলো সংষ্কার করা দরকার। উন্নয়নের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করতে বলেন তিনি।

সেমিনারে ড. শামসুল আলম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নয়ন, সামাজিক ঐক্য এবং পরিবেশের সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক ব্রান্ডিং অর্জনে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআইর সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির কারণে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে বাংলাদেশ। এসডিজির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জগুলো ব্যবসায় নতুন নতুন খাত তৈরির সম্ভাবনা জাগিয়েছে। এজন্য সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বেশি আনতে হবে। যাতে পিপিপির মাধ্যমে ব্যবসায়ীরাও সরকারের কাজে সহযোগিতা করতে পারে। 

নির্ধারিত আলোচনায় ইউএনডিপি বাংলাদেশর সহকারী কান্ট্রি ডিরেক্টর খুরশেদ আলাম এবং ঢাকা চেম্বারের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আকবর হাকিম অংশগ্রহণ করেন। খুরশেদ আলাম দারিদ্র বিমোচন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং পরিবেশ সুরক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

মুক্ত আলোচনায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরউল্ল্যাহ চৌধূরী, ঢাকা চেম্বারের পরিচালক খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, খ. আতিক-ই-রাব্বানী, পিআরআইপি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক আরোমা দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি অনিমেষ তাজু, এ্যাকশনএইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানাইজেশন স্ট্রাটিজি অ্যান্ড লিডারশীপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাশেদুর রহমান, অক্সফাম এর প্রাইভেট সেক্টর কোঅর্ডিনেটর আনিসুর রহমান চৌধুরী, আইসিসি-বাংলাদেশ’র মহাসচিব আতাউর রহমান অংশগ্রহণ করেন।

বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে মতিঝিলে অবিস্থিত ডিসিসি কার্যালয়ে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!