• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এসডিজি বাস্তবায়নেও সাফল্য আনতে হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৭, ২০১৬, ০৯:৪৮ এএম
এসডিজি বাস্তবায়নেও সাফল্য আনতে হবে

জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্যের ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আটটি লক্ষ্যের ৩৩টি উপসূচকের মধ্যে ১৩টি পুরোপুরি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এমডিজির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন । ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৯ শতাংশে নামানোর লক্ষ্য থাকলেও বাংলাদেশ এ সময়ে তা ২৪ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। এ ছাড়া শিক্ষা, লিঙ্গবৈষম্য, শিশুমৃত্যু, মাতৃস্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণে রাখা, টেকসই পরিবেশ এসব মূল লক্ষ্যের বেশির ভাগ উপসূচকেই লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। এমডিজির মূল্যায়ন নিয়ে তৈরি করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। বাংলাদেশ যেহেতু মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হওয়ার পথে হাঁটছে, সেখানে এ সাফল্যকে একটি মাইলফলক হিসেবেই বিবেচনা করা যেতে পারে।

গত বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই আলোচনায় এসেছে। এবার চূড়ান্ত প্রতিবেদনেও স্পষ্ট হলো বাংলাদেশ আটটি সূচকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। গৌরবের কথা, বিশ্বে এমন নজির খুব কমই আছে, যারা এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এবার সামনে রয়েছে এসডিজির চ্যালেঞ্জগুলো। যে কারণে পরিকল্পনা কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দারিদ্র্য বিমোচনসহ বাকি লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের জন্য সমন্বিত তৎপরতা আরো বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এমডিজি সাফল্যের পরও দেশের তিন কোটি ৭৬ লাখ মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। যাদের মধ্যে এক কোটি ৯৪ লাখ মানুষ হতদরিদ্র। ফলে মনে রাখতে হবে, এ বিপুলসংখ্যক মানুষকে বাইরে রেখে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। একটি দেশের সার্বিক উন্নয়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেয়া উচিত। সুতরাং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে, অভ্যন্তরীণ সম্পদের ব্যবহার এবং তা বিনিয়োগে আনার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। 

পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগও বাড়ানোর কার্যকর উদ্যোগ নেয়া অপরিহার্য। ২০৪১ সালের মধ্যে ভারত ও চীন বিশ্বে পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার যে প্রক্রিয়া চালাচ্ছে, সেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকেও তাদের প্রয়োজন হবে। ফলে এ সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশকেও সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এমডিজি অর্জনের পাশাপাশি এসডিজি অর্জনের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে এখনো নানা বিষয়ে আশানুরূপ উন্নয়ন ঘটেনি, যা প্রতিবেদনেই স্পষ্ট। তবে আশার কথা, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়নে বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। শিক্ষা, সাক্ষরতা, স্যানিটেশন ইত্যাদিতে অনেক দেশের চেয়েই এগিয়ে। স্বাস্থ্য সচেতনতাও বেড়েছে, বেড়েছে মাথাপিছু আয়। কমেছে লিঙ্গ বৈষম্য। সুতরাং বাংলাদেশ যে এগিয়ে চলেছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। 

দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে বেকারত্ব। ফলে সংশ্লিষ্টদের এমনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত, যাতে অভ্যন্তরীণ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হয়। সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনার সুষ্ঠু বাস্তবায়নই পারে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে। যা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকেই। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!