• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কার পেটে গেলো ৩২১ ভিক্ষুকের মুরগি-ছাগল?


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি নভেম্বর ২৩, ২০১৭, ০৩:১০ পিএম
কার পেটে গেলো ৩২১ ভিক্ষুকের মুরগি-ছাগল?

ঝিনাইদহ: বাংলাদেশে দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। সরকারি আমলা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই ছেয়ে গেছে দুর্নীতি এই কালো ছায়া। তবে ভিক্ষুকদের মুখের খাবারেও এমন হাত! হ্যাঁ এমনটাই ঘটেছে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে।

সম্প্রতি উপজেলায় ভিক্ষুকমুক্তকরণ কর্মসূচিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ কার্যক্রমে সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামার থেকে আনা ১৫টি ছাগল ভিক্ষুকদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি। বিষয়টি উল্লেখ করে সম্প্রতি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে ‘ভিক্ষুকমুক্তকরণ, ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন’ কর্মসূচি শুরু করে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। 

গত ৬ এপ্রিল ভিক্ষুকদের মাঝে ছাগল বিতরণের জন্য তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ছাদেকুর রহমান বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপপরিচালকের কাছে ১৫টি প্রজননসক্ষম ছাগল চেয়ে আবেদন করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রাণিসম্পদ বিভাগের নির্ধারিত মূল্য পরিশোধের পর চুয়াডাঙ্গা সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামার থেকে ১৫টি ছাগল সরবরাহ করা হয়। ৯ এপ্রিল জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার কালীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে ভিক্ষুকদের মাঝে ছাগলসহ নানা উপকরণ তুলে দিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করেন। 

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩২১ জন ভিক্ষুক চিহ্নিত করে, যাদের ছাগল, মুরগি, সেলাই মেশিন, ওয়েট মেশিন, বাদাম বিক্রির সামগ্রী, শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, চায়ের উপকরণ, বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ নানা উপকরণ দেয়া হয়। 

তাদের মধ্যে ১৫ জনকে একটি করে ছাগল দেয়া হয়। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, তাদের ছাগল দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে ১ নভেম্বর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিহির কান্তি বিশ্বাস প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। 

তবে অনুসন্ধানে অন্তত ১১ জনের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তাদের কাউকে ছাগল দেয়া হয়নি। গবরডাঙ্গা গ্রামের রহিম বক্স বলেন, দিনভর উপজেলা পরিষদে দাঁড়িয়ে থাকার পর তিনি একটা কম্বল পেয়েছিলেন। পাঁঠা বরাদ্দ হওয়ার বিষয়ে তিনি জানতেন না। বড় সিমলা গ্রামের আবদুল জলিলও একই কথা বলেন। তিনিও একটি কম্বল পেয়েছেন। 

ওই গ্রামের আসমানী বেগম বলেন, তারা গরিব। তবে তিনি কখনো ভিক্ষা করেন না। তার নাম তালিকায় ছিল। তবে কিছুই দেয়নি। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিহির কান্তি বিশ্বাস বলেন, পাঁঠাগুলো কোথায় বিতরণ করা হয়েছে, তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তিনি উপজেলা পরিষদ থেকে উপকারভোগীদের নাম নিয়ে তদন্ত করে সেখানে কোনো ছাগল দেখতে পাননি। 

ইউএনও উত্তম কুমার রায় বলেন, এখানে যোগ দেয়ার আগে ছাগলগুলো বিতরণ করা হয়েছে। এ কারণে বিস্তারিত বলতে পারছেন না। কেন তারা ছাগল পেলেন না, তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন। এ বিষয়ে জানতে তৎকালীন ইউএনও মো. ছাদেকুর রহমানের মুঠোফোনে বুধবার (২২ নভেম্বর) ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!