• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের প্রয়াণ দিবস আজ


বিনোদন প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭, ০২:৪২ পিএম
কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের প্রয়াণ দিবস আজ

ঢাকা: কিংবদন্তি নজরুল সঙ্গীতশিল্পী এবং উপমহাদেশীয় সঙ্গীতের রাজেন্দ্রাণী ফিরোজা বেগমের আজ তৃতীয় প্রয়াণ দিবস। ২০১৪ সালের আজকের দিনে এই সুরের সম্রাজ্ঞী মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৩০ সালে ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জে জন্ম নেওয়া গুণী এই শিল্পী ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন সময় অল-ইন্ডিয়া রেডিওতে গান গেয়ে সঙ্গীতবোদ্ধাদের নজরে আসেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে ১৯৪২ সালে তৎকালীন খ্যাতিমান সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান এইচএমভি থেকে বের হয় তার প্রথম গানের রেকর্ড। এইচএমভির রিহার্সেলেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাত হয়। প্রথম সাক্ষাতেই কবিকে তিনি গেয়ে শুনিয়েছিলেন- ‘যদি পরানে না জাগে আকুল পিয়াসা’। ১১-১২ বছরের ফিরোজার কণ্ঠে ওই গান শুনে নজরুল উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেন। জীবনের বাকিটা সময় ফিরোজা, নজরুলের গানকেই পরম মমতায় আঁকড়ে রেখেছিলেন।

মুসলিম নারীরা যখন ঘর থেকেই বের হতে পারতেন না, পর্দার আড়ালেই জীবন কাটিয়ে দিতেন, ঠিক সে সময় সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার পরিবারের কন্যা হয়েও সঙ্গীতের ব্যাপারে কখনো আপোষ করেননি সুরের এই সম্রাজ্ঞী। নজরুল সঙ্গীতকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া ফিরোজার বাবা ছিলেন ফরিদপুরের জমিদার খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল এবং মা বেগম কওকাবুন্নেসার। তার বাবা বৃটিশ সরকারের প্রথম মুসলমান সরকারি কৌঁসুলি ছিলেন। ১৯৫৬ সালে উপমহাদেশের বিখ্যাত সঙ্গীতকার কমল দাশগুপ্তের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন ফিরোজা বেগম। তাদের তিন পুত্র তাহসীন, হামিন এবং শাফিন। মা’য়ের মতো হামিন এবং শাফিনও সঙ্গীত জগতে নিজেদের প্রতিভা বিকশিত করেছেন।

ফিরোজা বেগম

শুধু নজরুল নয়, সঙ্গীতের সকল শাখায় ছিল ফিরোজা বেগমের অবাধ বিচরণ। শুধু এ দেশে নয়, দুই বাংলার বাঙালির কাছেই ফিরোজা বেগম সমানভাবে সমাদৃত। উপমহাদেশীয় সঙ্গীতের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় তাকে। নজরুল সঙ্গীত ছাড়াও গজল, কাওয়ালি, হামদ-নাত, ও আধুনিক গানসহ সব ধরণের গানেই তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন সানন্দেই, এমনকি গেয়েছেন রবীন্দ্রসঙ্গীতও। তার গাওয়া ‘মোমের পুতুল’, ‘দূর দ্বীপবাসিনী’, ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো’ গানগুলো তার সঙ্গীত জীবনে বড় ধরনের সাফল্য এনে দিয়েছিল।

সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য গুণী এই শিল্পী স্বাধীনতা পদক, একুশে পুরস্কারসহ পেয়েছেন আরো অনেক সম্মাননা। কিডনি জটিলতায় ভুগে ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিরতরে নিভে যায় সঙ্গীত জগতের এই পুরোধা ব্যক্তির প্রাণ। কিন্তু তার সেই গানের মতোই তিনি জ্বলজ্বল করে আছেন অগণিত ভক্ত, সঙ্গীতপ্রেমী, পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীর হৃদয়ের গভীরে- ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাবো, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে’।

সোনালীনিউজ/বিএইচ

Wordbridge School
Link copied!