• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কী ভাগ্য বরণ করতে হবে প্রধান বিচারপতির?


নিউজ ডেস্ক আগস্ট ২৪, ২০১৭, ১০:১৪ এএম
কী ভাগ্য বরণ করতে হবে প্রধান বিচারপতির?

গুজরাট ফরেন্সিক সাইন্স ইউনিভারসিটি পরিদর্শনে গিয়ে এস কে সিনহা

ঢাকা: পহেলা জুলাই বিচারপতিদের অপসারণ করার ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা সম্বলিত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তোপের মুখে পড়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দলটির নেতা, এমপি, মন্ত্রীরা গত তিন সপ্তাহ ধরে সামাজিক-রাজনৈতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেক ক্ষেত্রেই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত দু’জন নেতা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়েছেন। দেশের শীর্ষ আদালত এবং তার শীর্ষ বিচারকের সঙ্গে সরকার বা কোনো রাজনৈতিক দলের এমন আচরণের নজির বাংলাদেশে বিরল।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা

কি চাইছে আওয়ামী লীগ?
আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা ইউসুফ হোসাইন বলেছেন, তারা এই রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ বাতিল দাবি করছেন। ‘এক নাম্বার - কোনো একক ব্যক্তির নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়নি, যেটাকে আমরা মনে করছি বঙ্গবন্ধুর প্রতি ইঙ্গিত করা হচ্ছে। এটা কোনো অবস্থাতেই আমরা মেনে নিতে পারি না, দুই নম্বর, সংসদকে অকার্যকর, অথর্ব ইত্যাদি ভাষায় যেটা বলা হয়েছে, এটা অপ্রাসঙ্গিক।’

সংসদের বাইরের বিরোধী দল বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগ প্রধান বিচারপতিকে সরাতে চাইছে। আওয়ামী লীগ এমন দাবি না তুললেও তাদের একজন প্রভাবশালী এমপি ফজলে নুর তাপস মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতারা রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে তাদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন।

শীর্ষ আদালত এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের উপর কি প্রভাব ফেলতে পারে? এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলছেন, এতে অনেকগুলো খারাপ নজির স্থাপিত হচ্ছে। ‘আওয়ামী লীগের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তারা রিভিউ পিটিশন করার চিন্তা করছে। সেই অবস্থায় আপনি যখন চিফ জাস্টিসের বাসায় গিয়ে দেখা করেন, আপনি মামলার একটি সংক্ষুব্ধ পক্ষ হয়ে, তার মানে তো আপনি মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।’

ভারতে এস কে সিনহা 

‘দ্বিতীয়ত হচ্ছে, ব্যক্তিগতভাবে চিফ জাস্টিস সম্পর্কে যে সমস্ত অশালীন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে জুডিশিয়ারি যদি এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যায় তাহলে এই সরকারের বহু মন্ত্রীরই আর স্বপদে থাকার অধিকার থাকে না। আর যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে মনে হবে আদালত অবমাননা আইন, আইনের শাসন সমাজের অন্য মানুষদের জন্য। সরকারে যারা থাকে, যারা প্রভাবশালী তাদের জন্য নয়।’

তবে ব্যাপারটাকে ঠিক এভাবে দেখছেন না হাইকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদিন মালিক। তার ভাষায়- অনেকে আবেগতাড়িত হয়ে অনুচিত কথা বলছেন ঠিকই, কিন্তু পুরো বিতর্কটি গণতন্ত্রের জন্য সুখবর। ‘গণতন্ত্র মানে হচ্ছে তো আইনের শাসন। যখন আমরা রায় নিয়ে সমালোচনা করছি, তখন কিন্তু আমরা আইনটিকেই আমাদের আলোচনায় রাখছি ... আইন, রায় এটাকে আমরা খুব সিরিয়াসলি নিচ্ছি, এটা কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য একটা ভাল দিক।’ সূত্র: বিবিসি বাংলা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!