• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কীভাবে ওজন কমালেন আদনান সামি


বিনোদন ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৬, ০৯:৪৪ এএম
কীভাবে ওজন কমালেন আদনান সামি

যখন তিনি সংগীতশিল্পী হিসেবে সুপারস্টার, তখন তাঁর ওজন পৌঁছে গিয়েছিল ২০৬ কেজিতে। কিন্তু তারপর এক ধাক্কায় তিনি আমূল পরিবর্তন করে ফেললেন নিজেকে। অল্প সময়ের মধ্যে ঝরিয়ে ফেললেন ১৩১ কেজি। কিন্তু কীভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন আদনান?

আদনান সামি গায়ক হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয়। তাঁর ‘থোড়ি সি তো লিফট করা দে’র মতো গান একসময় তোলপাড় তুলেছিল ভারতীয় সংগীতজগতে। কিন্তু আরও একটি কারণে এককালে তিনি আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন। সেই কারণ ছিল তাঁর স্থূলতা। একসময় তাঁর ওজন পৌঁছে গিয়েছিল ২০৬ কেজিতে। কিন্তু তারপর এক ধাক্কায় তিনি আমূল পরিবর্তন আনলেন ওজনে। অল্প সময়ের মধ্যে ঝরিয়ে ফেললেন ১৩১ কেজি। কিন্তু কীভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন আদনান? এখানে ফাঁস হলো সেই রহস্য।

আদনানের সেই মোটা চেহারা অনেকের চোখে ‘মিষ্টি’ ঠেকলেও আদনান ওই চেহারায় মোটেই সুস্থ ছিলেন না। সংগীতজীবনে তিনি তখন যতই সাফল্য পান না কেন, ব্যক্তিগত জীবনে তখন তাঁর নানা ঝড়ঝাপটা চলছে। একদিকে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, স্থূলতার কারণে তাঁর শারীরিক অবস্থাও তখন নাজুক। অতিরিক্ত চর্বির জন্য সেই সময়ে আদনান রাতে ঘুমোতে পারেন না। শুলেই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে তাঁর। হুইলচেয়ার বা ওয়াকারের সাহায্য ছাড়া এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারেন না। হাঁটুর সমস্যাতেও তিনি তখন জর্জরিত। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছয় যে ডাক্তাররা তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এভাবে চলতে থাকলে আর বড়জোর মাস ছয়েক বাঁচবেন আদনান। তখনই সচেতন হন গায়ক। আদনানের বাবাও তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেন ওজন কমানোর জন্য।

এক বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে আদনান উড়ে যান আমেরিকার হিউস্টনে। ডাক্তাররা আদনানের সমস্যা বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারেন, আদনান খাওয়াদাওয়া করেন ইমোশনাল কারণে। যখনই কোনো কারণে অবসাদ, হতাশা বা শোকে আক্রান্ত হন তিনি, তখনই খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে নিজেকে খুশি করার চেষ্টা করেন। আর স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরে আদনানের জীবনে হতাশারও অভাব ছিল না। ফলে চেহারায় পরিবর্তন আনার জন্য শরীরে নয়, মনের বদল আনার প্রয়োজন ছিল আদনানের।

ডাক্তাররা পরামর্শ দেন, আদনান যেন হাই প্রোটিন ডায়েটে নিয়ন্ত্রণ আনেন। সাদা রুটি, ভাত, তেল কিংবা চিনির মতো খাবার খাওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে যায় আদনানের। কিন্তু তার মানে একেবারে বিস্বাদ খাবারদাবারের ওপর তাঁকে নির্ভর করতে হতো, তা নয়। বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে কোনো বাধা ছিল না আদনানের। লবণ ছাড়া পপকর্ন, ডায়েট ফাজ স্টিক, আইসক্রিমের বদলে আইসললির মতো খাবার খেতে আদনানের কোনো বারণ ছিল না। ডাক্তাররা অল্প-আধটু হাঁটাচলারও পরামর্শ দেন আদনানকে।

এই উপায়ে মাস খানেকের মধ্যে চার-পাঁচ কেজি ওজন কমে যায় আদনানের। কিন্তু তখনো নিজের চেহারায় বাহ্যত কোনো পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছিলেন না তিনি। আরও কয়েকটা দিন কেটে যাওয়ার পরে তিনি খেয়াল করেন, রাতে তিনি নির্বিঘ্নে ঘুমোতে পারছেন। শোয়া অবস্থা থেকে উঠতে কারও সাহায্য দরকার হচ্ছে না তাঁর। মাস কয়েকের মধ্যে ৪০ কেজি ওজন কমে যায় আদনানের। তখন তিনি ট্রেডমিলে দৌড়ানো ও হালকা ব্যায়াম করা শুরু করেন। আরও দ্রুত গতিতে ঝরতে থাকে তাঁর মেদ।

কঠোরভাবে নিজের ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেন আদনান। নিজের বাড়িতে সেই কাজটা করা কঠিন ছিল না, কিন্তু সমস্যা দেখা দিত তখন, যখন কোনো পার্টিতে বা সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে হতো তাঁকে। তখন পার্টিতে যেতে হলে এক অদ্ভুত কৌশল নিতেন আদনান। হাতে নানা খাবারে ভর্তি প্লেট ধরে রাখতেন তিনি। লোকে ভাবত, তিনি বোধ হয় কবজি ডুবিয়ে খাচ্ছেন। আসলে আদনান মুখে দিতেন না কিছুই।

এই কঠোর পরিশ্রমের ফল ফলে দ্রুতই। মাত্র ১১ মাসে ১৩১ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলতে সক্ষম হন আদনান। এখন আদনান একেবারে সুস্থ। রীতিমতো ঈর্ষণীয় স্বাস্থ্যের অধিকারী তিনি। অসুস্থতা ও মৃত্যুকে পাশ কাটিয়ে তিনি এখন ফিরে এসেছেন সুস্থতার দিকে। শুধু গানের ক্ষেত্রে নয়, আদনান সামি তাই বহু সুস্থতাকামী মানুষের কাছেও আজ অনুপ্রেরণা। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত খবর এবং ইউটিউবে প্রচারিত সাক্ষাৎকার

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!