• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
বাড্ডায় চার খুন

ঘাতকদের তথ্য-সহায়তা করেছিল উজ্জ্বল


বিশেষ প্রতিনিধি নভেম্বর ১, ২০১৬, ০৬:৫৬ পিএম
ঘাতকদের তথ্য-সহায়তা করেছিল উজ্জ্বল

ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ চাঞ্চল্যকর চার খুন মামলার আসামি উজ্জ্বল (২০) তথ্য দিয়ে ঘাতকদের সহায়তা করেছিলেন। ঘটনার সময় নিহতদের অবস্থান সম্পর্কে মোবাইল ফোনে হত্যাকারীদের জানিয়ে দিয়েছিলেন।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বাড্ডা থেকে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান গামার সঙ্গে অবস্থান করে উজ্জ্বল। সেখানে থেকে সে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া সদস্যদের তথ্য সরবরাহ করে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।

ঘটনার পর বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে ডিবি। একপর্যায়ে অপর আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে উজ্জ্বলের নাম বের হয়ে আসে। এরপর ৩১ অক্টোবর বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি (উত্তর) গুলশান জোনাল টিম।

গত বছর (২০১৫) ১৩ আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্প এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন বাড্ডার ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা ও ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ মানিক। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকালে মারা যান। এরপর ২৩ আগস্ট রাতে মৃত্যু হয় গ্যারেজ মালিক ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা আবদুস সালামের।

এ ঘটনায় নিহত মাহবুবুর রহমান গামার বাবা মতিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

সূত্রমতে, ২০১৪ সালে বাড্ডা আফতাবনগর কোরবানির পশুর হাটের ইজারা নিয়ে মাহবুবুর রহমান গামার সঙ্গে ভাগে অংশ নেন থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন রায়হান। হাটের কোটি টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে গেল বছরের (২০১৫) ৩ মে বাড্ডা জাগরণী সংসদ ক্লাবে আড্ডা দেয়ার সময় গুলি করে হত্যা করা হয় রায়হানকে। পরে সাড়ে ৫ কোটি টাকায় আফতাবনগর কোরবানির হাটের ইজারা পান মাহবুবর রহমান গামা।

এদিকে, বাড্ডার দুর্ধর্ষ কিলার গ্রুপ মেহেদীর সমর্থক ছিলেন রায়হান। তার মৃত্যুর পরে মেহেদী হাটের ইজারা বাবদ ৬০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে গামার কাছে। এই চাঁদা দাবির ঘটনার জের ধরেই মেহেদী, কাওসার, আরিফ, পবন ও পুলক নামে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ওই বছরের ১৩ আগস্ট রাতে আদর্শনগর পানির পাম্প এলাকায় গামাসহ ৫/৬ জনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। আর উজ্জ্বল ছিলেন নিহত গামার সহযোগী।

ঘটনার আগে উজ্জ্বলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ঘাতকদের কথোপথন হয়েছিল। ডিবি সন্দেহ করছে, গামার অবস্থান জানানোর জন্য উজ্জ্বল ঘাতকদের মোবাইল ফোনে ফোন করেছিল।

চলতি বছরের ২৭ আগস্ট বাড্ডায় চার খুনের ঘটনায় জুয়েল, সোহাগ, নাহিদ, কাব্য, ইকবাল ও রাজকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ডিবি পুলিশ হত্যাকাণ্ডে মেহেদী, কাওসার, আরিফ, পবন, পুলক ও উজ্জ্বলের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পায়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!