ছয় দফা দিবসে আ. লীগের কর্মসূচি

ঢাকা: ৭ জুন বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে যেমন পাক-ভারত উপমহাদেশের জনগণ ব্রিটিশ শোষকদের এদেশ থেকে তাড়ানোর জন্য ঐক্যমত হয়েছিল, ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ঘোষিত ছয় দফাকে পশ্চিমাদের এদেশ থেকে তাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছিল তৎকালীন পূর্ববাংলার জনগণ।

আইয়ুব খানের মার্শাল ল’ শাসন, ’৬২-এর শিক্ষানীতিসহ সব অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে এই ছয় দফার প্রতিটি দফা বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে বাংলার জনগণের সামনে তুলে ধরেন।

আইয়ুব খানের পতন, ১৯৬৯ এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে জাতির পিতাসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি আন্দোলনের প্রধান দাবি ছিল এই ছয় দফা। ছয় দফাভিত্তিক ১১ দফা ছিল উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের দাবিনামা। সর্বোপরি, বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব বাংলার জনগণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মনোনীত প্রার্থীদের একচেটিয়া রায় দেয়।

নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পরও পশ্চিম পাকিস্তানিরা যখন সরকার গঠনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য গড়িমসি শুরু করে, তখনই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু। ওই ভাষণেও ৬ দফার প্রতিটি দফার পর্যালোচনা ছিল।

পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকার বিভিন্ন সেক্টরের মাধ্যমে যুদ্ধ পরিচালনার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়েছিল ছয় দফার ভিত্তিতে।

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ছয় দফার ভূমিকা অপরিসীম। সে কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৬-দফা দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও সমগ্র জাতির সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ ও পালন করবে।

ছয় দফা দিবস পালনে আ. লীগের কর্মসূচি:

৭ জুন, সূর্য উদয় ক্ষণে- বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে- বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন।

এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুপুর আড়াইটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি এক বিবৃতিতে ৭ জুন (বুধবার) ছয় দফা দিবস পালন উপলক্ষে গৃহীত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী সকল সাংগঠনিক জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনসমূহের সকল শাখাসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/জেএ