• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মলগ্ন থেকে ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম


নিউজ ডেস্ক জানুয়ারি ১৮, ২০১৮, ১০:৫২ পিএম
জন্মলগ্ন থেকে ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দেশের জন্মলগ্ন থেকে ব্যাংকগুলোতে ত্রুটি, অনিয়মের শুরু হয়। দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা এখনো পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়। তবে এটাকে ত্রুটিমুক্ত করতে সরকারের চেষ্টার কমতি নেই। এগুলো কার্যকর করতে একটু সময় লাগে। জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার(১৮ জানুয়ারি) সংসদে এক সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের জবাবে অর্থমন্ত্রী এই কথা বলেন। সংসদের বেসরকারি দিবসে প্রস্তাবটি এনেছিলেন সরকার দলীয় এমপি ইসরাফিল আলম। তবে পরে অর্থমন্ত্রীর অনুরোধে তিনি প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেন।

প্রস্তাবে ইসরাফিল বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনিয়ম ও ত্রুটিমুক্তভাবে পরিচালনা করার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হোক।

জবাবে অর্থমন্ত্রী ব্যাংক খাতের সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম ও ত্রুটি বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে শুরু হয় এবং এক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করে। একসময় খেলাপি ঋণ হয়ে যায় ৪০ শতাংশ। এখন তা ১১-১২ শতাংশে নেমে এসেছে।

প্রস্তাব তোলার সময় ইসরাফিল বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক সাফল্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে ব্যাংক খাতের কিছু বিশৃঙ্খলার কারণে। ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে রাষ্ট্র পরিচালনার সংকট দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। ২০১৭ সালে ব্যাংক খাত নড়বড়ে অবস্থায় পড়েছে। ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ২০ টিতে আর্থিক অবস্থা ছিল দৃশ্যমানভাবে খারাপ। অন্য ব্যাংকগুলোতেও কমবেশি সুশাসনের অভাব ছিল।

ইসরাফিল বলেন, খেলাপি ঋণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে। নামে-বেনামে ইচ্ছামতো ঋণ নেয়া হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালক, নির্বাহী, বড় কর্মকর্তারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এটার জন্য তদন্ত করার দরকার নেই। খোলা চোখে মানুষ দেখেছে, জেনেছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়, সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ব্যাংক খাতের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে দুর্বল হয়েছে। কিছু কিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যা জোড়াতালি দেয়ার মতো। যা প্রয়োজনের তুলনায় যথার্থ ছিল না।

নওগাঁ থেকে নির্বাচিত এই এমপি বলেন, সরকারের প্রচেষ্টা নেই, আইন নেই, জনবল নেই—এ কথা বলতে পারি না। কিন্তু যারা এসব আইন প্রয়োগের দায়িত্বে আছে, প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছে তাদের ব্যর্থতার জন্য আর্থিক সেক্টর বিপর্যয়ের মুখে, বিপন্নতার মুখে পতিত হয়েছে। তার দায়িত্ব সরকার ও সংসদকে গ্রহণ করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগকেও বহন করতে হচ্ছে। তিনি ঋণ খেলাপিদের নাম ঘোষণা করা, কুঋণ দেয়ার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করার দাবি জানান।

ইসরাফিল বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। লুটপাটের পরেও সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা মূলধনের জোগান দিতে হচ্ছে। যে টাকা জনগণের করের টাকা, সাধারণ মানুষের ঘাম ঝরানো টাকা। নতুন ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। তারপরও নতুন নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে।

ইসরাফিল আরও বলেন, এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাংক নিয়ে চরম সন্দেহ-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। সরকারে এত সফলতা-গৌরব ম্লান করে দিয়েছে ব্যাংকিং খাতের ব্যর্থতা। যেসব ব্যাংক টাকা আত্মসাৎ করে, সেসব ব্যাংক টিকিয়ে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!