• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিগন্তজুড়ে সোনালী ধান আনন্দে ভাসছে কৃষক


রংপুর প্রতিনিধি নভেম্বর ২২, ২০১৬, ০৬:২৩ পিএম
দিগন্তজুড়ে সোনালী ধান আনন্দে ভাসছে কৃষক

রংপুর : ‘‘আবার জমবে মেলা হাটখোলা বটতলা’’। ‘‘অগ্রহায়ণে নবান্নের উৎসব সোনার বাংলা ভোরে উঠবে মেলায় বিশ্ব অবাক চেয়ে’’- কালজয়ী এ গানগুলি হৃদয় ভরিয়ে দেয় প্রকৃতি সাজিয়ে তোলে অপরূপ সাজে।

বাংলা মাস কার্তিক অগ্রহায়ণের সঙ্গে গা ঘেষা দু মাস মিলে হেমন্তকাল। এ ঋতুতে শিশিরের মতো  নিরন্তর নবান্নের সুবার্তা নিয়ে আসে অগ্রহায়ন। ফসলের ক্ষেতে সোনালী হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে কৃষকের মনে। হলদে পাকা ধানের আনন্দের দোলা যেন মনকাড়ে কষক-কৃষাণীর। সেই টানে ধান ক্ষেতে শুরু হয় কাটা-মাড়াই উৎসব। এ যেন বাঙ্গালির চিরায়ত ঐতিহ্য।

নতুন ধান কাটা ও সেই নতুন ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে এখন দেশের শস্যভান্ডার খ্যাত রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে চলছে নবান্ন উৎসব। হেমন্তের কুয়াশা ভেজা ঋতুতে দিগন্ত জোড়া মাঠে থাকা পাকা ধান ক্ষেতের হলদে সোনালী রঙই যেন নবান্নে মেতে থাকার প্রতিধ্বনি। সেই প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে, সবদিকে।

নতুন ধান আর নবান্ন নিয়ে বেশ প্রফুল্ল দেখা গেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের। এই উপজেলার টুকুরিয়া ইউনিয়নের দানিশনগর গ্রামের কৃষক আকবর আলী সোনালীনিউজ ডটকমকে জানান, এ বছর চলতি আমন মৌসুমের ধানের ফলন বিগত সময়ের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। একারণে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে চলছে নতুন ধানের চাল দিয়ে হরেক রকমের পিঠা, পুলি, পায়েস, খির নানা জাতের খাবার তৈরির উৎসব। রান্না হচ্ছে নতুন ধানের ভাত। খাওয়ানো হচ্ছে কৃষাণ-কৃষাণিসহ গ্রামবাসীদের।

এ অঞ্চলে নবান্ন উৎসবকে ঘিরে শ্বশুড় বাড়ি থেকে নাইয়র আনা হচ্ছে মেয়েকে। দাওয়াত দেয়া হচ্ছে জামাইকে। আবার অনেকেই পরম করুণাময়ের শুকরিয়া আদায় করে বাড়িতে মিলাদ মাহফিল ও মসজিদে সিরনি দিচ্ছেন।

অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ঢাক-ঢোল বাজিয়ে নেচে গেয়ে পূজা অর্চনা করে নতুন ধানের চালের ভাত গ্রহণ করছেন।

বাঙ্গালীর এই প্রাণের উৎসবকে ঘিরে রংপুরসহ আশপাশের উপজেলার গ্রামগুলোতে চলছে হা-ডু-ডু খেলা, লাঠি খেলা, ভাওয়াইয়া, জারি-সারিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।

এদিকে লক্ষ্য মাত্রা ছাপিয়ে বেশি ধান উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় নবান্ন উৎসবের এই আনন্দ চারদিক ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমীর চন্দ্র ঘোষ।

তিনি সোনালীনিউজ ডটকমকে জানান, চলতি আমন মৌসুমে ২৪,৮০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশ অনূকূল ছিলো। কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক তদারকি পার্সিং ও সরকারের ইঁদুর দমন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সহযোগিতার কারণে এ বছর লক্ষ্য মাত্রার ছাপিয়ে বেশি ধান কৃষকের ঘরে উঠছে এবং উঠবে। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!