• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
৩১(ক) ধারা উপেক্ষিত

নারীনির্যাতন: ৬ মাসে মামলা নিষ্পত্তি হয়-ই না


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৫, ২০১৬, ০৭:৪১ পিএম
নারীনির্যাতন: ৬ মাসে মামলা নিষ্পত্তি হয়-ই না

ঢাকা: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩১(ক) ধারার বিধানটি জন্মের পর থেকেই আর পালন করা হয়নি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক, পিপি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারাও আইনের এই বিধানটি পালন করেননি।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন সচিবের পক্ষ থেকে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ সময় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের ডিভিশন বেঞ্চ এসংক্রান্ত এক মামলা শুনানিকালে আজকের পর থেকে ৩১ (ক) ধারার নির্দেশনা পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনের ৩১ক ধারায় বলা হয়েছে,  নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তিবিধান রয়েছে। (১) কোন মামলা ধারা ২০ এর উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তিনা হইবার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালকে উহার কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া একটি প্রতিবেদন ত্রিশ দিনের মধ্যেসুপ্রীম কোর্টের নিকট দাখিল করিতে হইবে, যাহার একটি অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

(২) অনুরূপ ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকেও উহার কারণ লিপিবদ্ধকরিয়া একটি প্রতিবেদন ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট দাখিল করিতে হইবে, যাহার একটিঅনুলিপি সুপ্রীম কোর্টে প্রেরণ করিতে হইবে৷

(৩) উপ-ধারা (১) বা (২) এর অধীন পেশকৃত প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর যথাযথ কর্তৃপক্ষনির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধেযথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷

স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মিলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। ঘটনার দিনই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। ঐ বছরের শেষের দিকে মামলাটি চট্টগ্রামের নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারের জন্য যায়। চলতি বছরের ২১ মার্চ আসামির বিরুদ্ধেঅভিযোগ গঠন করে আদালত।

অভিযোগ গঠনের পর সাত মাসেও কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আইনানুযায়ী মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামির জামিন চেয়ে আবেদনকরেন আইনজীবী কুমার দেবলু দে। গত ১ নভেম্বর ঐ জামিন আবেদনের শুনানিকালে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। এরপরই আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান প্রতিপালন করা হয়েছে কিনা তা প্রতিবেদন আকারে অবহিত করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।

ঐ নিদেশের পর আজ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও  আইন মন্ত্রণালয়ে হাইকোর্ট প্রতিবেদন দাখিল করে। ঐ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট উপরিউক্ত আদেশ দেয়। একইসঙ্গে মিলাদ হোসেনের নামের ব্যক্তিকে জামিন না দিয়ে তার মামলাটি ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

একই সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০’র ৩১(ক) ধারার প্রয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৩১(ক) ধারার কোনো প্রয়োগ আছে কি না, এবং সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ অতীতে নিয়েছে কি না, তা জানতে চায় হাইকোর্ট।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!