• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মায় ডুবে যাওয়া ৩ লঞ্চ শনাক্ত, অভিযান স্থগিত


শরীয়তপুর প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭, ১০:৫৩ পিএম
পদ্মায় ডুবে যাওয়া ৩ লঞ্চ শনাক্ত, অভিযান স্থগিত

শরীয়তপুর: জেলার নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটে পদ্মার ভাঙনে ডুবে যাওয়া লঞ্চ ৩টি শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তীব্র স্রোতের কারণে আপাতত সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে উদ্ধার অভিযান সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ’র (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর মো. মোজাম্মেল হক এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, লঞ্চ তিনটি শনাক্ত করা সম্ভব হলেও স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান বন্ধ করা হল। ওই লঞ্চে থাকা ১৯ ব্যক্তিরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গত ১১ সেপ্টেম্বর পদ্মার ভাঙনে নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটের পল্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এসময় তীব্র স্রোতে পল্টুনে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া মৌচাক লঞ্চটি ওই ঘাট হতে ঢাকায়, নড়িয়া-২ ও মহানগরি লঞ্চটি নারায়নগঞ্জে চলাচল করত। দুর্ঘটনার দিন থেকে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবরী, নৌবাহিনীর ১৭ সদস্যসের ডুবরী দল ও ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা, ফরিদপুর ও শরীয়তপুরের তিনটি দল। উদ্ধারযান প্রত্যয় দুর্ঘটনাস্থলের পাশে নোঙ্গর করে রাখা হয়।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নড়িয়ার চণ্ডিপুর লঞ্চঘাটের কাছে নড়িযা-২ লঞ্চটি শনাক্ত করা হয়। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর এলাকায় মৌচাক-২ লঞ্চটি ও শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মহানগরি লঞ্চ শনাক্ত করা হয়।

সোমবার দুপুরে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান নড়িয়ার সাধুর বাজার লঞ্চঘাটে আসেন। সেখানে জেলা প্রশাসক, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, লঞ্চ মালিক, লঞ্চ শ্রমিক ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে সভা করেন। সভা শেষে তিনি উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, নদীতে প্রচণ্ড স্রোতে কারণে ডুবরীরা নদীর তল দেশে যেতে পারছে না। নদীর তলদেশে পৌঁছাতে না পারলে লঞ্চের সঙ্গে রশি বাঁধতে পারবে না, লঞ্চ টেনে উঠানোও সম্ভব হবে না। স্রোত কমে গেলে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর দুর্ঘটনার পর পরই উদ্ধার অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর যৌথ টিম। সোমবার দুপুরে দ্বিতীয় বারের মতো উদ্ধার অভিযান পরিদর্শনে আসেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক। এসময় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান, বিআইডব্লিউটিএ যুগ্ম পরিচালক উদ্ধার ফজলুল হক, নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন, ফায়ার সার্ভিস ফরিদপুর সহকারী পরিচালক এবিএম মমতাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

ডুবে যাওয়া লঞ্চ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে এমন খবর পেয়ে তাদের স্বজনরা ছুটে আসেন।

নড়িয়ার লোনসিং গ্রামের মোহাম্মদ আলী মাদবর ছেলে মাহিনকে নিয়ে ওই লঞ্চঘাটে ছুটে আসেন। লঞ্চ দুর্ঘটনায় স্ত্রী পারভিন আক্তার, পাঁচ দিন বয়সী কন্যা ও শ্বাশুড়ী ফকরুন নেছা নিখোঁজ হয়। স্ত্রীর লাশ পাওয়া গেলেও বাকিদের এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মোহাম্মদ আলী বলেন, পদ্মা নদী আমার সব কেড়ে নিল। এখানে আসি আর চোখের পানি ফেলি। নিখোঁজদের সন্ধান পাবো কিনা আল্লাহই জানেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!