• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচারের খরচের ভয়ে ‘আত্মগোপন’!


গাজীপুর প্রতিনিধি মে ২৫, ২০১৮, ০৪:৩১ পিএম
প্রচারের খরচের ভয়ে ‘আত্মগোপন’!

গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনের প্রচারে দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী চলতি রমজান মাসে ঘরোয়া নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন অনেকটা নিয়মরক্ষার খাতিরে। অনেকটা ইফতারকেন্দ্রিক প্রচার চলছে। আর নির্বাচনী প্রচারের অতিরিক্ত খরচের ভয়ে কোনো কোনো কাউন্সিলর প্রার্থী কৌশলে ‘আত্মগোপন’ করেছেন। কেউ কেউ নানা কৌশলে কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের এড়িয়ে চলছেন।  

জিসিসি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পূর্বনির্ধারিত তারিখ ১৫ মে পরিবর্তনের কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক প্রচার এখনো শুরুই হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৬ জুন ভোটগ্রহণের দিনকে সামনে রেখে ১৮ জুন থেকে এ সিটিতে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। এর আগেই রোজা ও ঈদ পড়ায় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা।  

বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ও কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে টাকা ছাড়া কর্মীদের ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ইফতার মাহফিলে টাকা খরচ হচ্ছে, সামনে আবার ঈদুল ফিতর। তখনো কর্মী-সমর্থকদের উপহার দিয়ে ধরে রাখতে দেদার টাকা খরচ হবে। এরপর আবার আনুষ্ঠানিক প্রচারের খরচের ধাক্কা সামলাতে হবে। সব মিলিয়ে খরচের ভয়ে খুবই বেকায়দায় রয়েছেন প্রার্থীরা।

১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ভোটার কাজী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মুসলেম উদ্দিন চৌধুরী মুসা নির্বাচনের সময় বেড়ে যাওয়ায় ওমরাহ হজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছেন। এই ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত মো. সিদ্দিকুর রহমান বাসার সামনের প্রচারণা কেন্দ্র গুটিয়ে তাবলিগ জামাতে গেছেন।  

১০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর খলিলুর রহমানের ব্যক্তিগত অফিস আমবাগ এলাকায়। সেখানে তার কয়েকজন কর্মী অফিসে বসে অলস সময় পার করছিলেন। জানতে চাইলে বলেন, কাউন্সিলর আজ আসেননি। তবে মাঝেমধ্যে তিনি অফিসে আসেন।  

১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাইফুল ইসলাম দিলীপের মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। স্থানীয় ভোটার ইকবাল হোসেন বলেন, নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর কয়েক দিন কাউন্সিলর প্রার্থীদের এলাকায় দেখা গেছে। কিন্তু নতুন করে নির্বাচনের ভোটের দিন ঘোষণার পর অনেক প্রার্থীকে আর আগের মতো এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। বাড়িতেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শওকত আলম বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিপদে আছি। টাকা ছাড়া কর্মীদের এখন ধরে রাখাও কষ্টকর। সামনে আবার ঈদ আছে তখনো টাকা খরচ হবে। আর ঈদের পর তো প্রচার-প্রচারণাও শুরু হয়ে যাবে।  

২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাজুলিয়া এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, কিছু দিন আগেও প্রার্থীদের কারণে বাড়িতে ঘুমানো যেত না। আর এখন তাদের দেখা যাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে দুই-একজনকে দেখা গেলেও বেশিরভাগ সময়ই আত্মগোপনে থাকছেন।  

গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারণ করা নেই। ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা হিসাবে নির্বাচনের ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে কোনো ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা ১৫ হাজার হলে তার নির্বাচনী ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ টাকা। আর ১৫ থেকে ২০ হাজার ভোটার সংখ্যা হলে তার নির্বাচনী ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ টাকা।

প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ওয়ার্ডভিত্তিক যে নির্বাচনী ব্যয় ধরা হয়েছে সেই টাকা প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারেই খরচ হয়ে যায়। এছাড়া কর্মী খরচ, আবার নতুন করে পোস্টার ছাপিয়ে তা সাঁটানো, পথসভা, উঠান বৈঠকসহ নানা খরচ রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!