• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু

বিএনপিতে নীরব প্রস্তুতি, বিভক্ত আ.লীগ


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৭, ২০১৬, ১০:৩৯ পিএম
বিএনপিতে নীরব প্রস্তুতি, বিভক্ত আ.লীগ

সম্ভাব্য প্রার্থী

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) থেকে বিতরণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে আবারো দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। আর দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির হাইকমান্ড এখনও নেতাদের নির্বাচন নিয়ে সবুজ সংকেত দেয়নি। তবে সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে ভেতরে ভেতরে নীরব প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় (রিটার্নিং অফিসার) থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ এক বর্ধিত সভা করে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নের জন্য তিনজনের নাম কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে পাঠিয়েছে। সেখানে বর্তমান সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর নাম দেয়া হয়নি। মনোনয়ন দেয়ার জন্য নাম পাঠানো হয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান এবং বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদের।

মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হলেও বর্তমান সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী তা সংগ্রহ করেননি। তবে তিনি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে সাংবাদিকদের কাছে আশা প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুত রয়েছেন স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম। এ দুই নেতাই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন।

সেলিনা হায়াৎ আইভী জানান, সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র প্রার্থী হবেন কি না এ ব্যাপারে আগামী রোববার (২০ নভেম্বর) সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবারো মেয়র পদে দাঁড়াবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আশা করছি আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। যদি না দেয়া হয় রোববার পর্যন্ত তো সময় আছে। তারপর দেখা যাবে কী হয়।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যখন নিজেদের প্রার্থী নির্ধারণে তোড়জোর করছে, তখন ভেতরে ভেতরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছেন বিএনপির সম্ভাব্য দুই প্রার্থী। এবার অনেকের নাম উঠে এলেও মূলত ওই দুজনের প্রস্তুতির খবর ঘুরে ফিরে পাওয়া যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন যদি আমাকে দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন, তাহলে আমি নির্বাচন করব। আপনারা তো দেখছেন, দলের জন্য আমি কতটা কাজ করি। আমি আশাবাদী, কাজের ওপর বিবেচনা করে এবং নেতাকর্মীদের কথা মাথায় রেখেই প্রার্থী নির্বাচন করবেন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

অপরদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও গতবারের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, প্রতিদিনই ঢাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক হচ্ছে। সিটি নির্বাচন নিয়ে নেত্রী অবশ্যই সিদ্ধান্ত দেবেন। আমি প্রার্থী হব কি না তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা আমাকে বলছেন সিটি নির্বাচন করতে।

টেলিফোনে ধমক: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাদের সতর্ক করেছেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ। স্থানীয় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের বদলে সার্কিট হাউসে বর্ধিত সভা ডেকে প্রার্থী ঘোষণা করায় এমপি শামীম ওসমানকে সতর্ক করে চিঠি দিতে বলেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ।

নির্বাচন স্থগিতে নোটিশ: সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার, বাতিল বা স্থগিত চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক প্রশাসক আবদুল মতিন প্রধান। সাবেক এ প্রশাসকের পক্ষে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২২ ডিসেম্বর। এটিই হবে প্রথমবারের মতো কোনো সিটি করপোরেশনে রাজনৈতিক দলের পরিচয় ও প্রতীকে নির্বাচন। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন আগামী ২৪ নভেম্বর। এর আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এক লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে শামীম ওসমানকে পরাজিত করে নাসিকের প্রথম সিটি মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী। আর ভোট শুরুর মাত্র সাত ঘণ্টা আগে বিএনপির প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে’ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ওই সময়ে সংবাদ সম্মেলনে তৈমূর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমাকে গোসল ছাড়াই কোরবানি দেয়া হয়েছে।’

একনজরে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন: *একজন মেয়রের সঙ্গে ২৭টি সাধারণ ও নয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট হবে। *মোট ভোটার চার লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ এবং নারী দুই লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮। ভোটার বেড়েছে প্রায় পৌনে এক লাখ। *সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৬৩টি ও ভোটকক্ষ ১২১৭টি। *১৬৩ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, এক হাজার ২১৭ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও দুই হাজার ৪৩৪ পোলিং কর্মকর্তা ভোট নেবেন। 

সোনালীনিউজ/এমএন 

Wordbridge School
Link copied!