বিলুপ্ত ছিটবাসীদের ভোটারভুক্তি শুরু ১০ জুলাই

অবশেষে ভোটার হতে যাচ্ছেন বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের এক বছরের মাথায় ১১১ ছিটমহলবাসী বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া ৩৭ হাজার ৩৫৩ জনের মধ্যে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধনের কাজ শুরু হচ্ছে ১০ জুলাই। চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। 

৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। এজন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিলুপ্ত ১১১ ছিটমহলে ভোটারযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে তথ্য সংগ্রহ শুরু হচ্ছে ১০ জুলাই। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৩৭ হাজার ৩৫৩ জন অধিবাসীর মধ্যে ১৮ বছর বয়সীদের ভোটার করা হবে। সেইসঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রও পাবেন তারা। এছাড়া সেপ্টেম্বরে এসব ভোটারের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে ভোটের আয়োজন করবে ইসি।

ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী, দাসিয়ারছড়াসহ ভারতের ১১১টি ছিটমহল ১ অগাস্ট প্রথম প্রহর থেকে বাংলাদেশের ভূখ-ে যুক্ত হয়। এর বাসিন্দারাও বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে যান। একইভাবে ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের অংশ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার জানান, ১১১ ছিটমহলের ৩৭ হাজার ৫৩৫ জনকে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ভোটারযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করার কাজ শুরু হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফরম পূরণের জন্য রোজার মধ্যে তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।

ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত চলবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন চলবে ১৭ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। ভোটার তালিকা নিয়ে দাবি, আপত্তি এবং শুনানি ও নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৪ সেপ্টেম্বর।

১৫ ইউপির ভোট অক্টোবরে : মার্চে ইউপি ভোট চলার সময় বিলুপ্ত ছিটমহলের ভোটার তালিকা পুনর্বিন্যাস সম্পন্ন না হওয়ায় ১৫টির ইউপি তফসিল বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এসব ইউপির ভোটগ্রহণ অক্টোবরে করার পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি।

ইসির সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান জানান, ইউপিগুলো হলো পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি, কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ, মারেয়া, বামোনহাট, বড়শশী; কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ভুরুঙ্গামারী সদর, পাথরডুবি, শিলখুড়ি; লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর বুড়িমারী, পাটগ্রাম, কুচলীবাড়ি, জগতবেড়, জোংড়া, বাউরা এবং হাতিবান্ধা উপজেলার গোতামারী। 

তিনি জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী পাশের ইউপিগুলোয় অন্তর্ভুক্ত হলে নির্বাচনের আর বাধা থাকবে না। ৩৭ হাজার ৩৫৩ নাগরিকের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ লোক ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলভুক্ত ইউনিয়নগুলোর কাজ শেষ হলে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে ভোটের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি