• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিলুপ্ত প্রায় জাতীয়তাবাদী কৃষকদল!


সোনালী বিশেষ নভেম্বর ৭, ২০১৭, ১১:২৫ এএম
বিলুপ্ত প্রায় জাতীয়তাবাদী কৃষকদল!

ঢাকা :  বিএনপির অঙ্গ সংগঠন কৃষকদল শুধু নামেই। রাজপথে দলীয় এবং কৃষকদের অধিকার সম্পর্কিত কোনো আন্দোলন কর্মসূচিতে সংগঠনটির কোনো উপস্থিতি চোখে পড়ে না।

দীর্ঘ ২০ বছর আগে বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিভিন্ন সময় নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও কমিটি পুনর্গঠন অথবা সম্মেলন করা হয়নি। বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরে দিবস পালন কর্মসূচি ছাড়া দলীয় কিংবা কৃষকদের স্বার্থ সংলিষ্ট জাতীয় কোনো ইস্যুতে কর্মসূচি নেই সংগঠনটির।

এমন অবস্থায় খোদ সংগঠনের নেতা-কর্মীরাই বলছেন, কৃষকদল বিলুপ্ত প্রায়। আবার কেউ বলছেন, মৃত্যু পথযাত্রী কৃষকদল। অনেকেই আবার কৃষকদলের বর্তমান পদও স্বীকার করতে চান না। এর কারণ হিসেবে ক্ষোভ প্রকাশ করে  তারা বলেন, ২০ বছর আগে একটা পদ পেয়েছি। ওই পদ এখনও বলতে হবে। আমাদের সবাই চেনেন কৃষক দল নেতা হিসেবে। কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের দাবি, লম্বা সময় ধরে সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। অনেক বার কাউন্সিলের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর আলোর মুখ দেখেনি। ফলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রতিনিয়তই সংগঠনের মধ্যে ঐক্য হারায়। সংগঠনিক কার্যক্রমে নেমে আসে স্থবিরতা। কৃষক দলে সর্বশেষ সভাপতি দায়িত্ব থাকার মির্জা ফখরুল ইসলাম সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। বর্তমানে সংগঠনটি অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।  

কৃষি এবং কৃষকদের উন্নতির লক্ষ্যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কৃষকদল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্যে ৫ নম্বরে বলা আছে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়ন এর মাধ্যমে গ্রামীণ তথা জাতীয় অর্থনীতিকে জোরদার করা। কিন্তু কালের পরিক্রমায় ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির কার্যক্রম এখন কঠিন সঙ্কটের মুখে। এখন অস্তিত্ব সংগঠন পড়েছে সংগঠনটি।

জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ১৬ মে সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ঘোষণাপত্র এবং গঠনতন্ত্রের ৯ নম্বর ধারায় উলে­খ আছে ‘জাতীয় কাউন্সিল হবে সংঠনের সর্বোচ্চ সংস্থা। দুই বছরে একবার জাতীয় কাউন্সিল বা জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দুই মাসের এবং জরুরি অবস্থায় ১৫ দিনের নোটিশে জাতীয় কাউন্সিল করা যাবে।’ সেই হিসাবে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৮ বছর আগে। এখন পর্যন্ত কোনো কাউন্সিল করতে পারেনি কৃষকদল।

কৃষকদল সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালের ১৬ মে সম্মেলনের মাধ্যমে মাহবুবুল আলম তারাকে সভাপতি ও শামসুজ্জামান দুদুকে সাধারণ সম্পাদক করে কৃষক দলের কমিটি গঠন করা হয়। ২০০১ সালে তারা বহিষ্কৃত হলে সিনিয়র সহ-সভাপতি মজিবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। ২০০৮ সালে তিনি মারা যাওয়ার পরে আরেক সহ-সভাপতি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সভাপতি করা হয়।

বিএনপির মহাসচিব এ্যাডভোকেট খন্দকার দেলোয়ার হোসেন ২০১১ সালে মারা যাওয়ার পরে ফখরুল দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে মহাসচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর ‘এক নেতার এক পদ’ দলের গৃহিত নীতির কারণে কৃষক দল থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তবে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এখন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন।

কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া সম্রাট বলেন, ২০ বছর আগে কৃষক দলের কমিটি গঠন করা হয়। গত ৫-৬ বছ বছর ধরে কৃষকদলের কার্যক্রম নেই। মহাসচিব (মির্জা ফখরুল) দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। দিবস পালন ছাড়া কোনো কর্মসূচি নেই। তিনি বলেন, কৃষক দল এখন বিলুপ্ত প্রায়। সংগঠনের কোনো কার্যক্রম না থাকায় মৃত্যুর পথযাত্রী এ সংগঠনটির বাঁচানোর এক মাত্র উপায় হচ্ছে নতুন কমিটি গঠন করা। এছাড়া আর কোনো পথ সামনে খোলা নেই।

কৃষকদলের বর্তমান সংকট সম্পর্কে জানতে চাইলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু একটি গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক দিন হয়েছে কৃষকদলের কোনো কাউন্সিল হয়নি। আমরা এ ব্যাপারে কাজ করে চলেছি। কিন্তু, বিশেষ কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। এছাড়া ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) দীর্ষ দিন দেশ বাইরে ছিলেন। এখন তিনি দেশে আসছেন। আমরা ম্যাডামের সঙ্গে কথা বললো। আশা করি, এ মাসেই (নভেম্বর) কৃষকদলের কমিটি গঠনের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!