• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোলায় ৬০০ বিসিএফ গ্যাস পাওয়ার আশা বাপেক্সের


ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন, ভোলা জানুয়ারি ১৭, ২০১৮, ১২:৩০ পিএম
ভোলায় ৬০০ বিসিএফ গ্যাস পাওয়ার আশা বাপেক্সের

ভোলা: জেলার বোরহানউদ্দিনের পর এবার সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নে আরও একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেড বাপেক্স।

নতুন এই ক্ষেত্রে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে ভোলার তিনটি গ্যাসক্ষেত্রে সর্বমোট প্রায় ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাপেক্স কর্মকর্তাগণ।

এদিকে ভোলায় নতুন আরও একটি গ্রাসক্ষেত্র আবিষ্কারের সংবাদে এলকাবাসীর মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে।

২০০৯ সালে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা গ্রামে প্রথম শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রথম গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। এরপর গত বছরের ৯ ডিসেম্বর একই উপজেলার মুলাইপত্তন গ্রামে শাহবাজপুর ইস্ট-১ নামে ভোলার দ্বিতীয় গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয়।

ওই একই দিন ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাট গ্রামে ভোলা নর্থ-১ নামে ভোলার তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্রটির অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়। এই নতুন গ্যাসক্ষেত্র ভোলার তৃতীয় এবং দেশের ২৭তম গ্যাসক্ষেত্র।

এদিকে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র ভেদুরিয়ায় গ্যাস মজুদের বিষয় নিশ্চিত হওয়ায় খবর শুনে ভোলার মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এলাকায় নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ভোলাবাসী।

এলাকাবাসীর দাবি- আমাদের ভোলায় গ্যাস পাওয়ার সংবাদে আমরা খুবই খুশি। আশা করছি এই গ্যাসকে কেন্দ্র করে এখানে অনেক কলকারখানা গড়ে উঠবে।

ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস সম্পদ রয়েছে। এই গ্যাস সম্পদ কাজে লাগিয়ে ভোলা তথা সমগ্র বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আমরা মনে করছি।
ভোলার গ্যাস দিয়ে আগে ভোলায় শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে। তারপর প্রয়োজনে ন্যাশনাল গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

ভোলা একটি দ্বীপ জেলা। সারা দেশের তুলনায় আমরা দীর্ঘ দিন অবহেলিত ছিলাম। এখন এখানে গ্যাস পাওয়া গেছে। গ্যাস উত্তোলন করাও হচ্ছে। আমাদের দাবি এই গ্যাসের উপর ভিত্তি করে ভোলায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হোক।

আমাদের গ্যাস আমাদেরকে গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করার সুযোগ দিতে হবে। আমাদেরকে না দিয়ে এই গ্যাস অন্যত্র নেয়াটা হবে অমানবিক। এটা ভোলাবাসী কোনভাবেই মানতে পারবে না।

এব্যাপারে ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাং সেলিম উদ্দিন জানান, ভোলার এই বিপুল গ্যাসকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন বিনিয়োগকারিরা আসবেন। এই গ্যাস অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে বলে জানান।

উল্লেখ্য, ভোলায় প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায় শাহবাজপুর ক্ষেত্রে। সেখানে ২০০৯ সালের ১১ মে উত্তোলন শুরু করে বাপেক্স। শাহবাজাপুরে ৩৫ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে বাপেক্সের প্রকৌশলীদের ধারণা। সেখানে থাকা চারটি কূপের মধ্যে তিনটি থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তোলা হচ্ছে।

গতবছরের অক্টোবরে ওই গ্যাসক্ষেত্রের পাশেই নতুন আরেকটি গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শাহবাজপুর ইস্ট-১’। এই ক্ষেত্রে ৭২০ বিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের মজুদ রয়েছে বলে বাপেক্সের কর্মকর্তাদের ধারণা। নভেম্বরে ওই কূপ থেকে পরীক্ষামূলক উত্তোলনও শুরু হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝির হাটে ভোলা নর্থ-১ নামে গ্যাস অনুসন্ধান কূপের খননকাজ শুরু করে বাপেক্স। এতে সহযোগিতা করছে রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল ও মার্কিন কোম্পানি হ্যালিবারটন। এ পর্যন্ত যে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে সেখানে গাস আছে। তবে আরও কিছু পরীক্ষা করলে নিশ্চিতভাবে পরিমাণ বলা যাবে। সেজন্য কয়েক দিন সময় লাগবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!