• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিলারদের কব্জায় ধান : বাড়ছে চালের দাম


নিউজ ডেস্ক জুন ৩০, ২০১৬, ০৫:০৩ পিএম
মিলারদের কব্জায় ধান : বাড়ছে চালের দাম

বোরো ধান নেই কৃষকের হাতে। চলে গেছে মিলারদের কব্জায়। তারাই চালের দাম বাড়িয়ে বাড়তি ফায়দা হাতিয়ে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে অজুহাত দেখানো হচ্ছে- পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধিও প্রস্তাব, যানজট ও সরকারের ধান-চাল কেনার। এসব অজুহাতে ইতিমধ্যে ইচ্ছেমতো চালের দাম বাড়িয়ে চলেছে মিলাররা। 

পাশাপাশি মিলাররা সরকারের কাছে ধান-চাল বিক্রি করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ বাজারে ব্যবসায়ীদের চাল সরবরাহ দেয়া হলে তা দামে কম এবং টাকা পেতেও দেরি হয়। কিন্তু সরকারের কাছে বিক্রি করলে নগদ টাকা পাওয়া যায়। আর এসব কারণেই রাজধানীর বাজারে চালের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজধানীর পাইকারি বাজাওে গত কয়েকদিনে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। বর্তমানে দেশের প্রান্তিক কৃষকদের কাছে বিক্রির জন্য কোনো ধান নেই। তবে কিছু অবস্থাসম্পন্ন কৃষকের কাছে ধান মজুদ রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন মিল মালিক মৌসুমের শুরু থেকে ধান কেনা শুরু করায় মজুদ এখন তাদের হাতে। এ অবস্থায় দাম বাড়ায় লাভবান হচ্ছে তারাই। মিলাররা এখন ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমানে সরকার নগদ ৩২ টাকা কেজি দরে মোটা চাল সংগ্রহ করছে। মিলাররা সে সুযোগে সরকারের কাছে চাল সরবরাহ দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজধানীর বাবুবাজার ও বাদামতলীতে এক মাস আগেও প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ২৩-২৪ টাকা। বর্তমানে তা ২৯-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তখন মিনিকেট চালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩৬-৩৭ টাকা। বর্তমানে তা লেনদেন হচ্ছে ৪২-৪৩ টাকায়। এই সময়ের ব্যবধানে মোটা ও চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬ টাকা। আর রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৩০-৩৪ এবং মিনিকেট ৪৪-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাল আড়তদাররা বলছেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে সব ধরনের চালের ওপরই প্রভাব পড়েছে। তবে চাল আমদানিতে শুল্ক তুলে নিলে বাজারে দাম কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকারিভাবে গত ৫ মে থেকে দেশব্যাপী ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। এখন পর্যন্ত সরকার ১ লাখ টনেরও বেশি ধান সংগ্রহ করেছে। আর সরকারের গুদামে মজুদ হয়েছে ৬ লাখ টনেরও বেশি চাল। আগামী অর্থবছর (২০১৬-২০১৭) বাজেটে চাল আমদানির ওপর কাস্টমস ডিউটি ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কারণ সরকারের কাছে চাহিদার তুলনায় দেশে চালের বিপুল মজুদ রয়েছে। সেজন্য সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাল রফতানি করবে।

সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আম, জাম, লিচু, কলা ও কাঁঠাল প্রচুর পরিমাণে রাজধানীতে আসছে। ওসব ফল বহনে ট্রাকগুলো বেশি টাকা পায়। রাজশাহী থেকে এক ট্রাক চাল ঢাকায় আনতে ভাড়া যেখানে ১২-১৪ হাজার টাকা। সেখানে আম বা অন্য কোনো ফল বহন করলে ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে ২০-২২ হাজার টাকা। এই অজুহাতে মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোধ চন্দ্র সাহা বলেন,  সরকার ধান কেনা শুরু করায় দাম কিছুটা বেড়েছে। আগে প্রতি মণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) মোটা ধান বিক্রি হয়েছিল ৩৬০-৪০০ টাকায়। বর্তমানে তা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধানের দাম ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে চালের ওপর প্রভাব পড়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!