• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইলে লেনদেন সীমা কমায় প্রভাব পড়বে ই-কমার্সে


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৩, ২০১৭, ১০:৩৩ পিএম
মোবাইলে লেনদেন সীমা কমায় প্রভাব পড়বে ই-কমার্সে

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সীমা কমিয়ে নির্দিষ্ট করায় দীর্ঘ মেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ই-কমার্স খাতে। বিশেষ করে ফেসবুকভিত্তিক ই-কমার্স তথা এফ কমার্স (ফেসবুক কমার্স) প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। 

ই-কমার্স লেনদেনে মূল্য পরিশোধের পদ্ধতিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় জনপ্রিয় মাধ্যম হলো মোবাইল ব্যাংকিং।

তবে ই-কমার্স খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে করে ই-কমার্স খাতে সমস্যা হলেও তা বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না। তবে দীর্ঘমেয়াদে এ খাতের ওপর তা প্রভাব ফেলতে পারে।

তারা আরো বলছেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে গেলে সীমা সমস্যা না হলেও এই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার যে সীমা রয়েছে, তা সমস্যায় ফেলতে পারে খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া অনেকে এর মাধ্যমে বেতন পেয়ে থাকেন। ফলে বেতনের টাকা তোলার সময় সমস্যা তৈরি করতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) তথা মোবাইল আর্থিক সেবা চালুর লক্ষ্য ছিল দরিদ্র ও ব্যাংকিং সেবাবহির্ভূত একটা বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিয়মতান্ত্রিক আর্থিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পলিসি সাপোর্ট, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিশ্রম এবং সাধারণ মানুষের আস্থার কারণে গ্রাহক ও লেনদেন দুটোই বেড়ে সেবাটি একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমএফএসকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে ই-কমার্সসহ নানা ধরনের ব্যবসা বেড়েছে। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়িক লেনদেন সম্পন্ন করছে। তেমনিভাবে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানও তাদের সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধ থেকে শুরু করে কর্মীদের বেতনও দিচ্ছে এর মাধ্যমে। ফলে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে কেন্দ্র করে এক ধরনের ডিজিটাল অর্থনৈতিক ইকো-সিস্টেম গড়ে উঠেছে।

নতুন নির্দেশনা কার্যকর হলে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি শামীম আহসান মনে করেন, এই নতুন নিয়মের ফলে ই-কমার্সে প্রভাব পড়বে। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স লেনদেনের মাত্র ১৫ শতাংশ বিকাশের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এ কারণে হয়তো এখনই খুব একটা প্রভাব পড়বে না। তবে পরবর্তী সময়ে দীর্ঘমেয়াদে এ খাতে প্রভাব পড়বে।’

অনলাইন শপ ‘আজকেরডিল’র প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি বোঝা যাবে না।

এটি কী ব্যক্তিগত মানি ট্রান্সফারের জন্যই প্রযোজ্য নাকি যেকোনো পেমেন্টের জন্যও সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। পেমেন্টের জন্য কোনো লিমিট থাকা উচিত না। কেননা পেমেন্ট হয় মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে। যাতে প্রতিটি লেনদেন কোন মার্চেন্ট পাচ্ছে তার রেকর্ড থাকে এবং কোনো সমস্যা থাকলে তা ধরা যায়।’

দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের মুখপাত্র জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে লেনদেনের সীমা পুনর্র্নির্ধারণ করে একটি নির্দেশনা দিয়েছে।

নতুন নির্দেশনা গ্রাহকদের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে আমরা বিশ্লেষণ করছি এবং গ্রাহকস্বার্থ অক্ষুণ রেখে কিভাবে নির্দেশনাটি প্রতিপালন করা যায় তা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’ সিন্দাবাদ ডটকমের প্রধান নির্বাহী জিশান কিংশুক হক বলেন, ছোট আন-স্ট্রাকচার্ড ই-কমার্স ব্যবসা তথা এফ-কমার্স ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদের বেশির ভাগই ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরটিই মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর হিসেবে ব্যবহার করছে। এসব ব্যক্তিগত নম্বরও কি বাংলাদেশ ব্যাংকের সীমা ঠিক করে দেয়ার আওতায় পড়বে?’

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর সভাপতি রাজীব আহমেদ 

বলেন, এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ না করেই বলতে চাই, ই-কমার্স ব্যাপারটি আলাদা করে বিবেচনা করা উচিত। ই-কমার্সে লেনদেনে অনেক সহজে রেকর্ড রাখা যায় এবং ট্র্যাক করার উপায়ও বের করা যায়। তাই ই-কমার্সের লেনদেনে কোনো সীমা বেঁধে দিলে তা এই খাতের জন্য ক্ষতিকর হবে।

সোনালীনিউজ/আতা
 

Wordbridge School
Link copied!