• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে স্ত্রীকে মাথা ন্যাড়া করে দিল স্বামী!


লালমনিরহাট প্রতিনিধি মার্চ ২৯, ২০১৮, ০৪:৪৯ পিএম
যে কারণে স্ত্রীকে মাথা ন্যাড়া করে দিল স্বামী!

লালমনিরহাট: জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী ও তার দুই বোন মিলে চার সন্তানে জননী শাহানারা বেগমকে (২৮)  ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে ওই গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার হয়ে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বুধবার (২৮ মার্চ) বিকেলে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিন রাতে নির্যাতিতা গৃহবধু স্বামীসহ ৪ জনের নামে থানায় অভিযোগ দেয়। বৃহস্পতিবার  (২৯ মার্চ) সকালে স্বামীসহ দুইজনকে আটক করেছেন পুলিশ।

আটকরা হলেন, উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে স্বামী বাবলু মিয়া (৩০) ও মেয়ে মহুরন নেছা (৩৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের উত্তর হলদীবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে বাবলু মিয়ার সঙ্গে টংভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃত ঝুল্লুর রহমানে ছোট মেয়ে শাহানারা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করলে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে জামাইকে ব্যবসা করার জন্য ১ লাখ টাকা দেন। একবছর  আগে শাহানারা বেগমের বাবার মৃত্যু হলে স্বামী বাবলু মিয়া আরো এক লাখ টাকা অথবা তার শশুরের বসতভিটা ১০ শতাংশ জমির বিক্রি করে টাকা নিয়ে আসার জন্য তার স্ত্রীকে চাপ দেন। শাহানারা বেগম এতে রাজি না হলে বাবলু মিয়া বিভিন্নভাবে অত্যাচার শুরু করে।

এ ঘটনার পর বুধবার (২৮ মার্চ) বিকেলে বাবলু মিয়া, তার বড় ভাই আব্দুল গফুর, দুই বোন মহুরন নেছা ও আমেনা বেগম মিলে যৌতুকের টাকা নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে শাহানারা বেগমকে বেধড়ক মারধর করে এবং তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। পরে  তার স্বামী শাহানারা বেগমের হাত-পা বেঁধে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে ঘরের মধ্যে তালাবন্ধ করে রাখে। পরে শাহানারা বেগম ঘরের বেড়ার বাঁধন কেটে ভুট্টা ক্ষেত দিয়ে পালিয়ে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন ।

শাহানারা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে তার স্বামী ও তার বড় ভাই (ভাশুর) ও দুই ননদ যৌতুকের জন্য প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করতো। চার সন্তানের কথা চিন্তা করে অত্যাচার, নির্যাতন নিরবে সহ্য করে আসছেন। তার বাবা-মা খুবই গরিব মানুষ। গত একবছর আগে ট্রেনে কাটা পড়ে বাবা মারা গেছেন। তারা ৪ বোন, এক ভাই।  

তার বাবার রেখে যাওয়া ১০ শতাংশ জমিতে আমার মাসহ বড় ভাই আবু বকর ও তার পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। এতে জমি বিক্রয়ের টাকা দিতে না পারায় সবাই মিলে লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়।

হাতীবান্ধা থানার ওসি উমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ লিখিত অভিযোগে বাবলু মিয়া ও তার বড় বোন মহুরন নেছাকে গ্রেপ্তার করে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!