• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের বিদেশ যাত্রায় ভেরিফিকেশনেই গলদ!


সোনালী বিশেষ মে ৭, ২০১৮, ০৪:৪৭ পিএম
রোহিঙ্গাদের বিদেশ যাত্রায় ভেরিফিকেশনেই গলদ!

ঢাকা : নানা ব্যবস্থা নিয়েও কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ যাওয়া। পুলিশ ভেরিফিকেশনেই গলদ থেকে যাচ্ছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি জানিয়েছেন, প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। এ অবস্থায় পাসপোর্ট দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে প্রশাসন।

গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন অনেক রোহিঙ্গা। এর মধ্যে সৌদি আরব, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়ায় রয়েছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সেসব দেশে অবস্থান করছেন। গত কয়েকদিন আগে খোদ প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান এই সংখ্যা অন্তত আড়াই লাখ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যেমন নাগরিকত্বের সনদ দিয়ে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করেছেন, তেমনি পাসপোর্ট নেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনেও ত্রুটি ছিল বলে অভিযোগ কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ ও প্রত্যাবাসন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আদিল চৌধুরীর।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের যারা পাসপোর্ট দিয়েছেন, এক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন এবং ভেরিফিকেশনগুলো যারা করছেন তারা সাবাই দায়ী। সেই সঙ্গে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে মেম্বার ও চেয়ারম্যানরা যে সার্টিফিকেটগুলো দিয়েছেন তারাও দায়ী।  

নব্বই দশক থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় রোহিঙ্গার অবস্থান ছিল ৪ থেকে ৫ লাখ। এর মধ্যে বিদেশ চলে যাওয়ার সুযোগ নিয়েছে অর্ধেকের বেশি। আর বর্তমানে এই দুই উপজেলায় রোহিঙ্গা রয়েছে অন্তত ১১ লাখ। এই অবস্থায় রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রাপ্তির বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।

কক্সবাজার উখিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন, মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের সতর্ক করেছি যাতে রোহিঙ্গারা কোনো অবস্থাতেই জন্মনিবন্ধন সনদ না পায়।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, পাসপোর্ট অফিসগুলোকে বলা আছে, তারা যেন পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে যাচাই-বাচাই ব্যতীত কোনো পাসপোর্ট না দেয়।

তবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট নেয়া ঠেকাতে স্থানীয়ভাবে বেশকিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে পাসপোর্ট অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে যেকোনো পাসপোর্ট দেয়ার আগে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি।

কক্সবাজার পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাকসুদুর রহমান বলেন, যেকোনো ব্যক্তি পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর পাসপোর্ট পাবেন। যখন কেউ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তখন তাকে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ভেরিফিকেশনের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন তারা গিয়ে আবেদনকারীর পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে ভেরিফিকেশন করেন এবং সেই অনুযায়ী প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেন।    

গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হওয়ার পর পাসপোর্ট অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ৩ হাজার রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। বায়োম্যাট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন হওয়ায় রোহিঙ্গাদের তথ্য পর্যায়ক্রমে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পাসপোর্ট অধিদপ্তর।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!