• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমস্যায় জর্জরিত শরীয়তপুরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল


শরীয়তপুর প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৭, ০৮:০১ পিএম
সমস্যায় জর্জরিত শরীয়তপুরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল

শরীয়তপুর: নানা সমস্যায় জর্জরিত শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত জেলার একমাত্র বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি। শ্রেণিকক্ষ, টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ, শিক্ষা উপকরণ ইত্যাদির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এদিকে সাধারণ বিদ্যালয়গুলোতে তথ্য প্রযুক্তি সম্পন্ন ক্লাসরুম থাকলেও প্রতিবন্ধীদের এ প্রতিষ্ঠানটি আজও এ ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ১৫ শতাংশ জমিতে ৪০ জন শিক্ষার্থী আর ৬ জন শিক্ষক নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর স্থানীয় উদ্যোগে এটি পরিচালিত হয়ে থাকলেও ২০১৬ সালের জুন মাসে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত "সুইড বাংলাদেশ" এর দায়িত্বভার গ্রহণ করে।

প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানে অসামান্য অবদানের জন্য ভেদরগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উন্নয়ন মেলা-২০১৭ তেও পুরষ্কার লাভ করে বিদ্যালয়টি।

অভিভাবক জান্নাতুল উসফুরা জানান, এই স্কুলে উপবৃত্তি কিংবা স্কুল ফিডিং চালু করা হয়নি। অথচ আশপাশের সাধারণ স্কুলগুলোতে এসব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের স্ট্যান্ড সাইকেল, প্যারালালবার, পিটি প্যারেডের জন্য ঢোল, হারমোনিয়ামসহ অন্যান্য সামগ্রী না থাকায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘক্ষণ স্কুলে থাকতে চায় না।

ভাঙাচোরা ঘরে পর্যাপ্ত টেবিল, চেয়ার না থাকায় গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে প্রস্তুতিমূলক, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, বৃত্তিমূলক ও গৃহভিত্তিতে ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে বিশেষায়িত এ প্রতিষ্ঠানটিতে। কোনো স্কুল ভ্যান না থাকায় নসিমন ও ভটভটিযোগে ঝুঁকি নিয়ে আসা যাওয়া করছে শিক্ষার্থীরা।

অভিবাবক মঞ্জিলা বেগম জানান, প্রায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন ৮০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে নাতিকে নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হই। ভাল হাঁটতে পারে না, তবুও যাওয়ার সময় হেঁটে যায়। কী আর করার অত টাকা কোথায় পামু। একটি গাড়ি দিলে কষ্ট কম হইতো।

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ফেরদাউস সরদার জানান, ২০১৪ সালে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নিজের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করলেও সরকারি তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা আমরা পাইনি। বিভিন্ন বেসরকারি সাহায্য সংস্থার সহযোগিতায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম। নানা সঙ্কটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান জানান, ৬ জন শিক্ষকদের দ্বারা বিদ্যালয়টি পরিচালিত হলেও তাদের বেতন ভাতা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছি আমরা।

তিনি বলেন, সরকারি সহযোগিতা না পেলে বিদ্যালটির কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ না থাকায় লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শ্যামল পান্ডে জানান, সরকারি বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যালয়টিকে আমরা ন্যূনতম সহযোগিতাও করতে পারিনি। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব তাদেরকে উৎসাহিত করে যাচ্ছি।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল আহাম্মেদ বলেন, নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে স্কুলটি। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়টির জন্য খুব শিগগিরই সরকারিভাবে ভবন নির্মাণ করা হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!