• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

হতাশার নাম ‘ভারতীয় ছবি’


বিনোদন প্রতিবেদক আগস্ট ১৪, ২০১৮, ০৯:২২ পিএম
হতাশার নাম ‘ভারতীয় ছবি’

ঢাকা : দেশের ছবি প্রদর্শন করলে মুক্তির চতুর্থদিনে এসেও কিছু দর্শক পাওয়া যায়। কিন্তু কলকাতার বেশিরভাগ ছবি চললে এই চিত্র উল্টে হয়ে যায়! এর আগে একাধিবার এমন হয়েছে। আবারও তাই হলো।

রাজধানীর বেশকিছু সিনেমা হলে চলছে ‘পিয়া রে’। গেল সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে। কলকাতায় বেশ ভালো করেছে সোহম ও শ্রাবন্তী অভিনীত ছবিটি। কিন্তু বাংলাদেশে গত চারদিনে নেই কোন দর্শক। ছবি চালিয়ে হতাশ খোদ হল মালিকরাও।

বলাকা হলের কর্মচারি মানিক বলেন, ‘এই ছবি চালিয়ে হতাশ হয়েছি। এতো ভালো একটি ছবি, একেবারেই নতুন তারপরেও দর্শক দেখছে না। এর আগের সপ্তাহে চলেছিল ‘পোড়মন ২’ মুক্তির এক মাস পেরিয়ে গেলেও কিছু দর্শক পাওয়া যেত। ‘পিয়া রে’ ছবিতে তাও নেই’।

বাংলাদেশে ছবি নির্মাণ কমে যাওয়া এবং মানসম্মত ছবি নির্মাণ না হওয়ায় ২০০০ সালের শেষদিক থেকে সিনেমা হল বন্ধের মিছিল শুরু হয়। সাড়ে ১২০০ সিনেমা হল থেকে ২৫০ বা তার কিছু বেশি সিনেমাহল রয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশে। আর এই সিনেমা হল বন্ধ ঠেকাতেই চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি-২০১০ সালে ভারতীয় ছবি আমদানির উদ্যোগ নেয়। এতে হিন্দি এবং বাংলা দুই ভাষার ভারতীয় ছবি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়।

২০১২ সালে প্রথম কলকাতার ‘জোর’, ‘বদলা’ এবং ‘সংগ্রাম’ আমদানি করা হয়। তখনকার সময়ে আমদানিকারকরা মনে করেছিল এদেশের দর্শক ভারতীয় ছবি লুফে নিবে। কারণ, ডিস ও ডিভিডিতে দারুণ জনপ্রিয় ছিল ভারতীয় ছবি।

গেল কয়েকবছরে যা নিয়মিত হয়ে গেছে। এখন প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ভারতীয় ছবি মুক্তি পাচ্ছে। পরিতাপের বিষয়, এখন পর্যন্ত কোন ছবিই পায়নি কাঙ্খিত সাফল্য। বাংলাদেশে কলকাতার ছবির কেন এই বাণিজ্যিক ব্যর্থতা?

আশ্চার্যজনকভাবে কলকাতার হিট, সুপারহিট, ব্লকবাস্টার সব সিনেমা এদেশে চরম ব্যর্থ হয়। তারপরও নিয়মিত চলছে কলকাতার ছবি আমদানী করার পায়তারা।

কলকাতার ছবি কেন নিচ্ছে না বাংলাদেশী দর্শক? কয়েকটি কারণ স্পষ্ট-

১. কলকাতার ছবি বেশিরভাগ তামিল তেলেগু ছবির কপি। যা সেখানেই চলে না। এদেশের দর্শক তা দেখবে কেন?

২. কলকাতায় মৌলিক গল্পের যে ছবি নির্মাণ হয় অর্থাৎ সৃজিত মুখার্জি, মৈনাখ ভৈমিক, কৌশিক গাঙ্গুলি, শিবপ্রসাদের ছবিগুলোর মতো দর্শক সিনেপ্লেক্সভিত্তিক। সেখানকার হলগুলোতেও এর খুব বেশি দর্শক নেই। সেখানে এসব ছবি চালিয়ে কিছু আয় করা সম্ভব হয়। এসব ছবি টিভিতে বিক্রি ও ছবিগুলোর গান বিক্রি করেও লাভবান হওয়া যায়। এসব ছবির দর্শকও আমাদের দেশে সিনেপ্লেক্সভিত্তিক। এ ধরনের ছবি বাংলাদেশি হলে চালিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়।

৩. বাংলাদেশে সিনেপ্লেক্সের বাইরে ঢাকার মধুমিতা ও বলাকা সিনেমা হল ছাড়া উচ্চ বা মধ্যবিত্তের ছবি দেখার মতো আর কোনো সিনেমা হল নেই। তাই এসব ছবি কোথায় প্রদর্শন হবে?

৪. কলকাতায় ছবি মুক্তির পর রপ্তানির বিনিময়ে আমদানি করতে গেলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র প্রয়োজন হয়। এরপর এলসির মাধ্যমে আমদানি, বিমানবন্দর ও সেন্সর ছাড় করাতে গিয়ে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ততদিনে বাংলাদেশি দর্শক কোন না কোনভাবে কলকাতার সিনেমা দেখে ফেলেন। আর ইদানিং টেলিভিশন প্রিমিয়ারাও হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি।

বর্তমান সময়ে ঢাকার সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, বাংলাদেশে কলকাতার ছবির ব্যবসায়িক সাফল্য পেতে হলে দুই দেশে একসঙ্গে ছবি মুক্তি দেওয়ার বিকল্প নেই। এত যেটা হবে। হলরক্ষা হবে। তাছাড়া ছবিটির জোর প্রচারণাও চালাতে হবে। অনেক সময় দর্শক জানেনই না ছবি মুক্তি পেয়েছে। এতে করে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ে কলকাতার সিনেমা।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!