• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ মাসেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি বিএনপির স্থায়ী কমিটি


সোনালী বিশেষ অক্টোবর ২৮, ২০১৭, ০২:৫৩ পিএম
১৫ মাসেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি বিএনপির স্থায়ী কমিটি

ঢাকা : জাতীয় সম্মেলনের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার ১৫ মাস পেরিয়ে গেলেও দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির দুই শূন্যপদে কারও নাম ঘোষণা করতে পারেনি বিএনপি। আর এই সময়ে স্থায়ী কমিটির দুই জন সদস্য চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। তাদের মধ্যে আ স ম হান্নান শাহের মৃত্যুতে ফাঁকা হওয়া পদ পূরণ হয়নি ১৪ মাসেও।

এদিকে, দীর্ঘদিনেও স্থায়ী কমিটিসহ দলের শূন্যপদ পূরণ না হওয়ায় পদ প্রত্যাশী নেতা ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। অনেকে বিভিন্নভাবে ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। তবে প্রকাশ্যে কেউ এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

গত বছরের ৬ আগস্ট ১৯ সদস্য বিশিষ্ট দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির দুইটি পদ খালি রেখে ১৭ সদস্যের নাম ঘোষণা করে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির দুই শূন্য পদ পূরণ না হতেই কমিটি ঘোষণার প্রায় দুই মাস পর মারা যান প্রবীণ সদস্য আ স ম হান্নান শাহ।

এসব ফাঁকা পদ কবে পূরণ হবে তারও সঠিক তথ্য নেই কারো কাছে। কিন্তু এরই মাঝে সোমবার রাতে মারা গেছেন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এম কে আনোয়ারও। তার চলে যাওয়ায় এখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির চারটি পদ ফাঁকা হলো। গত বছর ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলের সাড়ে চার মাস পর ৬ আগস্ট স্থায়ী কমিটিসহ বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পদ প্রত্যাশীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কবে নাগাদ কাকে শূন্য পদে নেয়া হবে। নাকি আদৌ পূরণ করা হবে কি না, তা বলার মালিক একমাত্র চেয়ারপারসন। দেখতে দেখতে অনেক দিন হয়ে গেলো। এখন আর এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না। একই প্রসঙ্গে বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, চেয়ারপারসন যেহেতু দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থান করে ফিরেছেন। আশা করি, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ বিষয়েও কথা হয়েছে। আর দুইজন শীর্ষ নেতা তো হঠাৎ করে চলে গেলেন। এখন নিশ্চয়ই পদগুলো পূরণ হবে। কারণ আগে দুটি পদ থাকলেও এখন তো চারটি শূন্য হলো।

আগের কমিটি থেকে সারওয়ারী রহমান ও শামসুল ইসলামকে বাদ দিয়ে স্থায়ী কমিটির ১৭ জনের নাম ঘোষণা করা হয় ওই সময়। তবে বলা হয়েছিলো, দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি দুজনের নাম ঘোষণা করা হবে। স্থায়ী কমিটির ১৭ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন হলেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (পদাধিকারবলে), সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান (পদাধিকারবলে), খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (পদাধিকারবলে)। ১৯ নম্বরে রাখা হয় সালাউদ্দিন আহমেদকে। তবে শুরু থেকে ফাঁকা ছিলো ১৭ ও ১৮ নম্বর সদস্যের পদ। ৮ নম্বরে ছিলেন হান্নান শাহ। আর এম কে আনোয়ার ছিলেন ৯ নম্বরে।

বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের শূন্য পদগুলো পূরণের এখতিয়ার দলীয় প্রধানের। তিনি যখন চাইবেন তখনই নিয়োগ দেবেন। নানা সময়ে চেয়ারপারসন দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা এমনটা বললেও সহসা এ নিয়ে আর তেমন আগ্রহীরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে যাদের নিয়ে গুঞ্জন ছিলো দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে আসার ব্যাপারে তাদের বেশ কয়েকজনকে আগের থেকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম তো রাজনীতি থেকেই অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গত ২৩ মার্চ রাজনীতিতে এক সভায় এমন ঘোষণা দেয়ার পর থেকে আর তাকে রাজনীতিতে দেখা যায়নি।

বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিলে শাহ মোয়াজ্জেমের অনুসারীরা প্রত্যাশা করেছিলেন দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে জায়গা পাবেন তিনি। কিন্তু তাকে ভাইস চেয়ারম্যান করায় তার অনুসারীরা হতাশ। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নাম ঘোষণার পর বেশির ভাগ সময় নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি।

এম কে আনোয়ারের মৃত্যুর আগে স্থায়ী কমিটির তিন পদের বিপরীতে শাহ মোয়াজ্জেম ছাড়াও আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমানের নাম শোনা যেত। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানকেও এই পদে আনা হতে পারে এমন গুঞ্জনও শোনা যেত।

তবে আলোচনায় থাকা এসব নেতাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান ও সেলিমা রহমানকে তেমন একটা দেখা যায় না। সাদেক হোসেন খোকা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!