• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক

৯০ শতাংশই ভারতের অনুকূলে


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৩০, ২০১৮, ১১:৫০ এএম
৯০ শতাংশই ভারতের অনুকূলে

ঢাকা : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাটতিও বাড়ছে। বর্তমানে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ৯০ শতাংশই ভারতের অনুকূলে। গত এক যুগ ধরে এই অবস্থা। দ্রুত অবস্থা পরিবর্তনের সম্ভাবনাও দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।

দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের যতটুকু যার দখলে সেটাই তার অনুকূলে বলা হয়। ৯০ শতাংশ ভারতের অনুকূলে থাকার অর্থ হচ্ছে- যদি দুই দেশের মধ্যে ১০০ টাকার বাণিজ্য হয় তার মধ্যে ৯০ টাকা ভারতের আর ১০ টাকা বাংলাদেশের। এ হিসাবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে বড় ধরনের ঘাটতিতে রয়েছে বাংলাদেশ। তবে নব্বইয়ের দশকের তুলনায় অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ওই সময় মোট বাণিজ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশই ছিল ভারতের অনুকূলে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যের ভিত্তিতে এফবিসিসিআইয়ের সরবরাহ করা তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) ভারতে ৬৭ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে ৬১৬ কোটি ২২ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে। বাংলাদেশের তুলনায় ৫৪৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলারের বেশি পণ্য রফতানি করেছে ভারত। এ হিসাবে মোট বাণিজ্যের ভারত ৯০.১৬ শতাংশ ও বাংলাদেশ ৯.৮৪ শতাংশ রফতানি করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮৮.৭৭ শতাংশ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৯১.৭০ শতাংশ পণ্য রফতানি করে ভারত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের বড় ধরনের ঘাটতি রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে ঘাটতি কমাতে চাইলে বাংলাদেশকে রফতানিপণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ভারতে পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকলেও নানা ধরনের অশুল্ক বাধার মুখে পড়তে হয়। এ ছাড়া ভারতে রফতানির পর সেখানে ফের পণ্যের মান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। টেকনিক্যাল, স্ট্যান্ডারাইজেশন ও পণ্যের মিউচুয়াল রিকগনিশন সম্পর্কে চুক্তি না থাকায় পণ্য রফতানিতে সমস্যার মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশকে।

এ ছাড়া দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতির বড় কারণ হলো- পণ্য আমদানিতে ভারতনির্ভরতা। পেঁয়াজ, আদা, মরিচ থেকে শুরু করে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভারত থেকে আমদানি করা হয়। বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় সময় সাশ্রয়ী ও পরিবহন ব্যয়ও কম হওয়ায় ভারত থেকে পণ্য আমদানির পরিমাণও বেশি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের (বিএফটিআই) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলী আহমেদ বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি যুগ যুগ ধরেই বিরাজ করছে। সম্প্রতি প্রাণসহ কয়েকটি কোম্পানির নতুন কিছু পণ্য ভারতে রফতানি হচ্ছে। কিন্তু ভারত থেকে আমরা যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করছি তার তুলনায় এ পরিমাণ খুবই সামান্য। রফতানির পরিমাণ বাড়াতে হলে আমাদের রফতানিযোগ্য পণ্যের পরিমাণ ও মান বাড়াতে হবে।

রফতানির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর এবং পণ্যের গুণগত মান নির্ধারণে একই নীতিমালা অনুসরণে চুক্তি সম্পাদনে ভারতকে বলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা বিভাগের পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গত কয়েক বছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির পরিমাণ বাড়লেও উত্তরোত্তর বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রচুর কাঁচামাল আমদানি করছে। শিল্পের অপরিহার্য পণ্য হিসেবে এ ধরনের পণ্য আমদানির ফলে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়লেও এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। কিন্তু বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বাড়ছে না। অশুল্ক বাধার পাশাপাশি অ্যান্টি-ডাম্পিং নীতিমালার কারণে ভারতে পণ্য রফতানিতে অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। এ ধরনের সমস্যা মেটানোর জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!