• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
বাজার দর

সবজির বাজার বেজায় অস্বস্তি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৫, ২০২০, ০৮:০৬ পিএম
সবজির বাজার বেজায় অস্বস্তি

ঢাকা : করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে বেশ কিছুদিন কম থাকার পর বেড়েছে সবজির দাম। বেশিরভাগ সবজিই এখন ৪০ টাকার ওপরে। কিছু কিছু সবজি ৮০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। গত এপ্রিল মাস থেকে সবজির দাম কম ছিল। গত সপ্তাহের শুরুতেও বেশিরভাগ সবজি ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তবে স্বস্তি ফিরছে ডাল, চিনি, তেল, আদা, রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে।

বিক্রেতারা জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে অনেক এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে রাজধানীতে সবজির সরবরাহ কমেছে। এ কারণে গত কয়েক দিনে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে প্রায় সব স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি ফের শুরু হওয়ায় এবং পরিবহন সচল হওয়ায় অন্যান্য পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো থাকা দাম কমছে।

রাজধানীর গোপীবাগ, মালিবাগ, মুগদা, মানিকনগরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে এমন  তথ্য পাওয়া যায়।

ট্রেডিং করপোরেশন অব  বাংলাদেশ (টিসিবি) হিসাবে গত ২৭ মে থেকে বৃহস্পতিবার (৪ জুন) পর্যন্ত ৭ দিনে মোট ১৫টি পণ্যের দামে পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ডিম, আলু ও ছোলা এই তিন পণ্য ছাড়া বাকিগুলোর দাম কমেছে।

বাজার ঘুরে জানা যায়, সবজির দাম চড়ছে গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকেই। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) প্রায় সবসজির দামই দ্বিগুণ হয়ে যায়। শুক্রবারও (৫ জুন) সেই বাড়তি  দামেই বিক্রি হয়েছে আলু, পটল, বেগুন, করলা ও কাঁচামরিচসহ প্রায় সব সবজি।

বিক্রেতা বলছেন, আড়তে দাম বাড়লে আমাদের কী করার আছে।

দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শুরুতেও যে করলা খুচরায় ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে গতকাল তা ছিল ৮০ টাকার ওপরে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই এখন ৩৫০ টাকা কেজি পাল্লা (পাঁচ কেজি) করলা। সব খরচ যোগ করে খুচরায় বরবটিও ৮০ টাকা কেজির কমে বিক্রি করা যায় না বলে দাবি বিক্রেতাদের।

গাজরের দাম আরও বেড়ে কেজি এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।  পেঁপে, টমেটো, শসা, বেগুন, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, কাঁকরোলের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এসব সবজি আগের সপ্তাহে ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। একই হারে বেড়ে ঢেঁড়শ ও পটলের কেজি এখন ৪০ টাকা। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া যেত। তবে কমেছে লেবুর দাম। বড় আকারের লেবুর হালি এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকা পাওয়া যায়। যা আগে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ছিল।

সবজি বিক্রেতা আবদুস সালাম বলেন, সবজির দাম পরিবর্তনের কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই। একেক সময় এক এক কারণে বাড়ে। তবে আড়তে মাল এখন কম।

আড়তদারা বলছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর থেকে আড়তে সবজি কম আসছে। অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকার মোকামে দাম বেড়ে গেছে।

বাজারে সবজির দাম বাড়লেও কমেছে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর মসুর ডাল ও রমজানের আগে চিনির দাম বেশ বেড়েছিল। গত সপ্তাহে কেজিতে বড় দানার মসুর ডালের দাম ২০ টাকা কমে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ছোট দানা মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা কমে ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। চিনির কেজিতে পাঁচ টাকা কমে খুচরায় ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত চিনির দাম এখনও ৭০ টাকা।

ভোজ্য তেল সয়াবিন লিটারে ২ টাকা কমে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা, পাম তেল আগের মতো ৬৫ থেকে ৭০ টাকা লিটার। খুচরা বাজারে প্যাকেট আটার দাম কমেছে ৩ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত। আগে ৩৩-৪২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া প্যাকেট আটার দাম কমে ৩০-৩৫ টাকা হয়েছে। কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে প্যাকেট ময়দার দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, যা ৪২-৪৮ টাকা ছিল। খোলা ময়দার দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমেছে। আগে যে ময়দা ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল তা এখন ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটার দাম কেজিতে ২ টাকা কমে এখন ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঈদবাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকায় উঠেছিল। গত সপ্তাহে তা কমে দেড়শ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। এখন তা কেজিতে আরও ১৫ টাকা কমে ১৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি লেয়ার মুরগির দাম ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। সোনালি মুরগি কেজিতে ২০ টাকা কমে ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর মাংস কেজিতে ২০ টাকা কমে ৫৮০ টাকা হয়েছে।

আগের সপ্তাহে পেঁয়াজের দর কমলেও গত সপ্তাহে কমেছে রসুন ও আদার দাম। এখন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। রসুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে চীনা রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা এবং দেশি রসুন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদার দামও কেজিতে ৩০ টাকা কমায় ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!