• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাদিক সাকলায়েনের তিনটি কবিতা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২২, ২০১৬, ০৫:৫৮ পিএম
সাদিক সাকলায়েনের তিনটি কবিতা

দুর্বোধ্য কবিতা সহজে বোঝার নিয়ম


উদ্বেগ এবং আমি
পরস্পর মুখ চাওয়াচাওয়ি করি
বিচলতার এক চিলতে পর্দা নড়েচড়ে ওঠে
এই বুঝি শোনা যাবে আসন্নপ্রসবা চিৎকার
-তোমার কোনও চিহ্ন নেই!

আশায় আশায় আঙুলের দিন গোনা সংখ্যাক্রম
পরিণত হয় ক্রমশ শঙ্কার কালবোশেখিতে,
বয়সী বটের নিচে ইতস্তত ধূসরতা পড়ে থাকে
বুট তলার মর্মরে গুটিসুটি কাঠবেড়ালের মতো,
বিরহের বেয়নেট আর আর্তির রক্ত জমাট চোখ
তাক করে রাখে মগজের মহিমা মিনার,
এখানে পরাধীনতা যেনো কিশোরীর বইচাপা বুক

তবু, বেড়ার ফাঁকে বাড়ন্ত গুল্মের উদ্ধত ডগা
সব বারণ, সান্ধ্য আইন অমান্য করে
প্রতিবেশী ঘাসের উঠোনে বেড়াতে আসে
এটা ওটা গল্পের পর ধার করে নিয়ে যায় প্রার্থিত প্রজ্ঞা
অথচ তুমি সবার জন্য হতে পারতে কী রকম উন্মুক্ত অভয়
আমার উৎফুল্লতার থরেবিথরে জীবন্ত কাগজের ফুল!

বোঝো না।
যখন তুমি নিজেও নিজেকে বুঝতে পারো না
দুর্বোধ্য কবিতা সহজে বোঝার নিয়ম
তখন আমার সান্ত¡নার ভাষা; তখন ভাবি
অভিমানে অথবা আগ্রহে, স্বচ্ছলতায় কিংবা সংগ্রামে
প্রত্যেক পুরুষই কবি, প্রতিটি নারীই কবিতা;
কবিতা মানে আবেগ, কবে হুট করে আসে
আর চলে যায় অনায়াসে।

 


হাত পাখা


আমাদের ভাতে তেলাপোকা হাঁটে
চালে কাঁকর, সবজিতে আপদ
চালের ফোঁকরে শিশুরা আগামী দেখে
দেখতে দেখতে রুটিন বেলা গড়ায়

‘কাটে না সময়’ নিয়ে কর্মহীন
পড়ে থাকে দুপুরের এক্সপ্রেস,
মেশিনের মতো মায়ের হাতে অনবরত চলে
চৈতালি হাওয়া লেখা প্লাস্টিকের হাতপাখা।

 


দেশটা


দেশটাকে ওরা বনসাই করে রেখেছে
বর্ধিষ্ণু শাখাপ্রশাখাগুলোকে
বামন করে রেখেছে কেটেকুটে

দেশটাকে ওরা কাটছে দয়াহীন কসাই
ওলান বিছিন্ন করে বিলিয়ে দিচ্ছে
মেটাতে কুকুর, শকুনের তেষ্টা

দেশটাকে ওরা পিষছে হামান-দিস্তায়
নষ্ট করছে বীজ, দুর্ভিক্ষ লেলিয়ে দিতে
ফলের সমাহার ‘দাবায়ে’ রাখার অপচেষ্টা

দেশটাকে ওরা ভেবেছে মগেরমুলুক
অশ্লীল নৃত্য নেচে যা খুশি বলুক
কোনো প্রতিবাদ নেই

ওরা কি জানে না এই দেশে
স্বাগত মৃত্যুর পয়গাম, তবু পরাজয়ে অস্বীকার?
ওরা কী ভুলে গেছে বারুদে বুক রেখে
একটি ফুলকে বাঁচাবার অঙ্গীকার?

দেশটাকে ওরা দশজন মিলে ছিঁড়েখুঁড়ে
কদর্য লালসার নিচে ফেলে
উল্লাস করতে চায়

দেশটাকে ওরা অধীনস্থ জ¦ীনের মতো
প্রথাগত সংকীর্ণ চেরাগে পুরে
চিরকাল আয়ত্তে রাখতে চায়

দেশটাকে ওরা কিনেছে, যেনো ক্রীতদাস
ভুখা, বিকলাঙ্গ কোটি মানুষের বাস
লাথি খেয়েও ফিরে আসবেই

ওরা কি শোনেনি বধিরের দল
একাত্তরে আবেগের একাত্ম গর্জন?
ওরা কি দেখেনি অন্ধ তীরন্দাজ
ভালোবাসার জন্য সন্তান বিসর্জন?

এই দেশ, এ আমার প্রশ্বাসের পরিধি
একদিন এইখানে তোরা করজোরে নতজানু হবি।



সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!