• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
SonaliNews

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল

ওরাল সেক্সে আছে যেসব ক্যানসারের ঝুঁকি


স্বাস্থ্য ডেস্ক অক্টোবর ২৫, ২০১৭, ১১:১৩ এএম
ওরাল সেক্সে আছে যেসব ক্যানসারের ঝুঁকি

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: ওরাল সেক্স বা মুখমেহন যতটা না যৌন তৃপ্তি দেয় তার চেয়ে শারীরীক ক্ষতিই বেশি হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক জানিয়েছেন, এতে পুরুষদের মাথা ও কাঁধের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। যারা নিয়মিত ধূমপান করেন এবং একাধিক সঙ্গিনীর সঙ্গে ওরাল সেক্সে অভ্যস্ত, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির একদলের গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি অ্যানালস অব অনকোলোজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো পুরুষ যদি পাঁচ বা ততোধিক নারীর সঙ্গে ওরাল সেক্স করেন, তাহলে তার হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে। এই ভাইরাসটি এইচপিভি নামে পরিচিত। আর এই ভাইরাসের থেকেই ওই ব্যক্তির ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া ওই পুরুষ যদি ধূমপায়ী হন, তাহলে ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ গলার মধ্যভাগের ক্যানসার সারিয়ে তুলতে পারেন। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি পুরুষদের তুলনায় অনেক কম।

গবেষকেরা বলছেন, ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সার্ভিক্যাল ক্যানসারের চেয়ে ওরাল সেক্সের কারণে হওয়া মাথা ও কাঁধের ক্যানসার খুব বেশি প্রকট হয়ে উঠবে। শতাধিক এইচপিভি ভাইরাস রয়েছে। তবে বিপজ্জনক হচ্ছে এইচপিভি ১৬ ও এইচপিভি ১৮ ভাইরাস। এ দুটোর কারণে সার্ভিক্যাল ক্যানসার হয়। আর এইচপিভি ১৬ থেকে অরোফারিঙ্গাল ক্যানসার বা গলার মধ্যভাগের ক্যানসার ছড়াতে পারে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন এক্সামিনেশন সার্ভের প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণায় ২০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ১৩ হাজার ৮৯ নারী-পুরুষের এইচপিভি পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষদের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। যা থেকে মাথা কাঁধের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি অনেক।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, যে নারীর জীবনে ওরাল সেক্সের সঙ্গী নেই, তার এইচপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তেমন কোনো ঝুঁকি নেই। আর ধূমপায়ী নন, এমন নারীদের মধ্যে মাত্র দশমিক ৫ শতাংশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। তবে যেসব নারীর দুই বা ততোধিক ওরাল সেক্সের সঙ্গী আছে, তাদের ক্ষেত্রেও এইচপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পুরুষদের ক্ষেত্রেও একইভাবে এই প্রবণতা রয়েছে। যারা পাঁচ বা ততোধিক নারীর সঙ্গে ওরাল সেক্সে অভ্যস্ত এবং ধূমপায়ী, তাদের ১৫ শতাংশের এইচপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

এই গবেষণার আরেক গবেষক ও জনস হপকিন্সের অটোলারিঙ্গোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ক্যারোল ফাখরি বলেন, ‘অরোফারিঙ্গাল ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য বর্তমানে তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা নেই। এই ক্যানসার সচরাচর হয় না। আর সুস্থ মানুষের এই পরীক্ষা করাটাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। কারণ, পরীক্ষায় ভুল ফলও আসতে পারে, যা মানুষের চিন্তা অযথাই বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।’

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা বিশ্বে এখন ওরাল সেক্স করার হার বাড়ছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ-তরুণীদের কাছে এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়।

যুক্তরাজ্যের প্রথম ন্যাশনাল সার্ভে অব সেক্সুয়াল অ্যাটিচুডস অ্যান্ড লাইফস্টাইলসে (১৯৯০-৯১) বলা হয়েছে, দেশটির ৬৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ ও ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ নারী শারীরিক সংসর্গের সময় সঙ্গীদের সঙ্গে ওরাল সেক্স করেন।

যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয়বার করা ন্যাশনাল সার্ভে অব সেক্সুয়াল অ্যাটিচুডস অ্যান্ড লাইফস্টাইলসে (১৯৯৯-২০০১) বলা হয়েছে, দেশে ওরাল সেক্স করা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছ। ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ ও ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী শারীরিক সংসর্গের সময় সঙ্গীদের সঙ্গে ওরাল সেক্স করেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!