এসআই আকবরকে পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর

  • সিলেট প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২০, ০৯:৪৪ এএম

ঢাকা: বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে গ্রেফতার হওয়া বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর কাছে হস্তান্তর করেছে জেলা পুলিশ। 

সোমবার (০৯ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে তাকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

তিনি জানান, গ্রেফতারের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে আকবরকে এসপি কার্যালয়ে আনা হয়। পরে পিবিআইর পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। রাত পৌনে ৮টার দিকে পিবিআই’র একটি দল এসে আকবরকে নিয়ে গেছে।

এর আগে সোমবার সকালে কানাইঘাটের দনা সীমান্ত থেকে ভারত পালানোর সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে নিয়ে আসা হয় এসপি কার্যালয়ে।

সেখানে সংবাদ সম্মেলনে সিলেটেরিএসপি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ভারতে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাটের দনা সীমান্ত থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তিনদিনের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এসপি আরো বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আসে আকবর কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমরা কানাইঘাট সীমান্ত এলাকায় আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে নজরদারি বাড়িয়ে দেই। এই বিশেষ টিমের নেতৃত্ব দেন কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের ওসি।

সোমবার সকাল ৯টার দিকে ভারত পালানোর সময় কানাইঘাটের দনা সীমান্ত থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে কানাইঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে এসপি কার্যালয়ে আনা হয়।

আকবরকে ভারতীয় খাসিয়ারা আটক করার ভিডিও ভাইরাল হওয়া প্রসঙ্গে এসপি বলেন, জেলা পুলিশের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে আকবরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এর আগে যদি কেউ কোনো ভিডিও করে থাকে তবে সেটা তাদের বিষয়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ ভিডিও করেনি।

এসপি বলেন, আমরা সব সময় পুলিশিং কাজে মানুষের সহযোগিতা নিয়ে থাকি। এখানে আমাদের নির্ভরযোগ্য বন্ধু ছিলো তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে।

আকবর ভারত পালিয়ে গিয়েছিলো কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো তাকে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এমনও হতে পারে সে একবার ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল, এখন আবার দেশে আসতে চেয়েছিল। আবার এমনও হতে পারে বাংলাদেশ থেকে ভারত যাওয়ার পথে গ্রেফতার হয়েছে। এখানে দুটো প্রক্রিয়া হতে পারে। তবে আমরা তাকে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করেছি।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আকবরকে দেশ ছাড়তে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে যদি এ রকম কোনো তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন।

এ সময় তিনি বলেন, পুলিশ আবারো প্রমাণ করেছে আইন অমান্য করলে বা কেউ নিজের হাতে তুলে নিলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আসতে হবে, বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এসআই আকবর যে কাজ করেছে অত্যন্ত জঘন্য কাজ করেছে। তাকে শাস্তি পেতে হবে সেটা আমরা চাই।

সোমবার দুপুরে সিলেটের কানাইঘাট থেকে পুলিশি নির্যাতনে রায়হান হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভুইয়াকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ। পরে তাকে নিয়ে আসা হয় কানাইঘাট থানায়। সেখান থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে আনা হয় এসপি কার্যালয়ে। এ সময় বিক্ষোব্ধ জনতা অবস্থান নেন এসপির কার্যালয়ে বাইরে।

গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান রায়হান। ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান। এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচ