রাজশাহীতে হাটে হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়, রেহাই পাচ্ছেন না বিক্রেতাও

  • রাজশাহী ব্যুরো | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৫, ০৩:০৪ পিএম
ছবি : প্রতিনিধি

রাজশাহী: শেষ মূহুর্তে ব্যাপক জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজশাহীর কোরবানির পশুর হাটগুলো। হাটে প্রচুর পরিমাণের পশুর আমদানি হচ্ছে। বেচাকেনাও হচ্ছে প্রচুর। তবে অভিযোগ উঠেছে  প্রায় প্রতিটি হাটেই অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে। কোনো হাটেই ইজারার শর্ত মানছেন না কেউ।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী পশুহাটে প্রতিটি ছাগল ও ভেড়ার জন্য ২০০ টাকা করে হাসিল নির্ধারিত আছে। এছাড়া গবাদি পশুর ক্ষেত্রে কেবল ক্রেতাদের কাছ থেকেই খাজনা নেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু এ হাটে একজন ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।

নির্দেশনা থাকলেও এ হাটেও হাসিলের কোনো চার্ট টাঙানো দেখা যায়নি। বাংলা ১৪৩২ অর্থবছরে ৭৮ লাখ টাকায় হাটটির ইজারা নিয়েছেন ধর্মহাটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান। তিনি প্রথমে দাবি করেন, অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে না। পরে তিনি বলেন, অনেক টাকায় ছাগল-ভেড়ার এই হাট ইজারা নিয়েছেন। বেশি টাকা না নিলে টাকা উঠবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর সব হাটেই অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে। গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি পশুহাটে একটি ছাগলের জন্যই আদায় করা হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। অথচ ছাগলের হাসিল ৩০০ টাকা নির্ধারিত। গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পশুহাটে গরু প্রতি ৮০০ টাকা ও ছাগল প্রতি ৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তানোরের মুণ্ডুমালা হাটেও গরুপ্রতি ৭০০ ও ছাগল প্রতি ৪০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা হাটে গরুর জন্য ৭০০ ও ছাগলের জন্য ২৪০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় পশুহাট সিটিহাট। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এই হাটটি ইজারা দেয়। এ হাটে গরুপ্রতি হাসিল ৭০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে রাসিক। তবে ইজারাদারের লোকজন আদায় করেন ৮০০ টাকা। অভিযোগ পেয়ে গত সোমবার সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা গিয়ে আদায়কারীদের সতর্ক করে আসেন। এরপরও মঙ্গলবার ও বুধবার হাটে গরুর ক্রেতাদের কাছ থেকে ৮০০ টাকা করেই আদায় করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে হাটে গরু কিনতে এসেছিলেন কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা কবিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘হাটে হাসিল বেশি নেবে, এটাই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ইজারার শর্ত কয়জন মানে? একা প্রতিবাদ করে লাভ নাই। তাই ৮০০ টাকাই দিয়ে দিলাম।’

অতিরিক্ত হাসিল আয়ের বিষয় স্বীকার করেছেন আদায়কারীরাও। তারা বলছেন, ৭০০ টাকা হাসিল নির্ধারিত হলেও তারা ৮০০ টাকা আদায় করছেন। ১০০ টাকা বেশি না নিলে তাদের ‘চলবে না’। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইজারাদার শওকত আলীকে বুধবার দুপুরে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

রাসিকের সচিব রুমানা আফরোজ বলেন, এটা তার জানা নেই। অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

এসআই