রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার কাজীপাড়া এলাকায় রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা এক কৃষকের ১১৭টি আমগাছ কেটে ফেলেছে। দুই বছরের পরিশ্রম, বিনিয়োগ ও স্বপ্ন এক মুহূর্তে ভেঙে পড়েছে। ঘটনার শিকার কৃষক সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, বাগানের সর্বস্বান্তি ঘটেছে।
বাগানে গিয়ে কৃষক ভোরে হতবাক হয়ে যান। সারি সারি আমগাছ গোড়া থেকে কাটা অবস্থায় পড়ে ছিল। মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ডালপালা ও পাতার স্তূপ। অনেক গাছে তখনও নতুন মুকুলের কুঁড়ি ঝুলছিল, যা চলতি মৌসুমে ভালো ফলনের আশা জাগিয়েছিল।
সাইদুর রহমান জানান, দুই বছর আগে পবার সিন্দুর কুসুম্বী মৌজায় ১৩৩টি উন্নত জাতের আমগাছ রোপণ করেছিলেন। এদের মধ্যে ছিল বারোমাসি, কাটিমন, আম্রপালি, হাঁড়িভাঙ্গা, গৌড়মতি ও বারি-৪ জাতের গাছ। নিয়মিত সেচ, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই দমনে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন। শুরু থেকেই ফলন ভালো হওয়ায় এবছর ফল বিক্রি করে পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি আশা করেছিলেন।
কৃষক আরও জানান, গতকালই আমগাছের পাশে প্রায় ৬০ কেজি রসুনের বীজ রোপণ করেছিলেন। কিন্তু ভোরে গিয়ে দেখেন সব শেষ। ১৩৩টির মধ্যে ১১৭টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতি শুধু আর্থিক নয়, দুই বছরের পরিশ্রম, ভবিষ্যৎ আয়ের সম্ভাবনা ও পরিবারের জীবিকার নিশ্চয়তাও একসঙ্গে ধ্বংস হয়েছে।
ঘটনা জানার পর আশপাশের কৃষক ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার নিরিবিলি পরিবেশ দুর্বৃত্তদের জন্য সুবিধাজনক হয়েছে। স্থানীয় মনোয়ারা বেগম বলেন, গাছের সঙ্গে শত্রুতা থাকা উচিত নয়। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
পবা থানার উপপরিদর্শক প্রতাপ কুমার জানান, কৃষকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পূর্বশত্রুতা, জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
এসএইচ