রংপুর: নারীর প্রতি অবহেলা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। অন্ধকার যুগকে পাশ কাটিয়ে আলোময় যুগে বিশ্বসভ্যতার অবির্ভাব হলেও এখনো থেমে নেই নারী নির্যাতন, নিপীড়ন-যৌন হয়রানি। ভোগের পণ্য হিসেবেই নারীকে সবক্ষেত্রে উপস্থানের চেষ্টা এখনো রয়েছে বহাল রয়েছে সমাজে।
হাসিঠাট্টা আর যৌন লালসার শিকারে নারীকে ‘মাল’ হিসেবে বিবেচনা করার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সভ্য সমাজের অসভ্য কিছু মানুষের দৃষ্টিতে নারী যেন বাজারের অন্যসব পণ্যের (মাল) মতোই। তাইতো গ্রামগঞ্জে, শহরে চলার পথে রাস্তাঘাটে, কর্মস্থলে, রাজনীতিতে এমনকি পরিবারেও নারীকে ‘মাল’ বলে ডাক দিয়ে তার মর্যাদার হানি ঘটানো হচ্ছে।
আজ ৮ মার্চ বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন, যৌন নিপীড়ন, অবহেলা বন্ধের স্লোগানে স্লোগানে সারাবিশ্বে যে আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ছে, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেকটি স্লোগান- ‘মাল-কে মাল বলুন, নারী-কে নয়’।
নারীর সম অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম যত বেগবান হচ্ছে। ততই আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে নারীকে পণ্য হিসেবে দেখার এই প্রবণতাও বাড়ছে। আর এই প্রবণতা ঠেকাতে না পারলেই একদিন সত্যি সত্যি বিশ্বসভ্যতার আধুনিকীরণের পথে নারীকে ফের চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে আরব সমাজে নারীকেন্দ্রিক সংঘটিত ঘটনাগুলো আবারো ছড়িয়ে পড়বে দিগ্বিদিক।
নারীকে ‘পণ্য’ বা ‘মাল’ হিসেবে না দেখে পুরুষের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখে তার কাঙ্ক্ষিত সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক সবখানে, সবস্থানে এমন দাবি সমগ্র নারী সমাজের।
বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস এর মানবাধিকার কর্মী বিলকিস বেগম বলেন, ‘নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপনে সবচেয়ে সহায়ক ভুমিকা রাখছে মিডিয়াগুলো। এ কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি বাড়ছে। অথচ আমরা মনে করছি, মিডিয়ায় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে নারীর উপস্থিতি পণ্যের প্রসারতা বাড়াচ্ছে। কিন্তু আসলেই তা ঘটছে না’। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রসাধনীসহ বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন না করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি কামনা করেন।
অন্যদিকে ভিন্ন মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিকর্মী নার্গিস রহমান। তিনি বলেন, ‘লক্ষ করবেন আমাদের মিডিয়াগুলোই নারীদেরকে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে’।
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞাপনের নামে মিডিয়াতে যে অশ্লীলতা প্রকাশ পায়, তা সমাজে ব্যভিচার, নারী নির্যাতন ও যৌন হয়ারানি বাড়িয়ে তুলেছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামাল দিতে নারীরা নিজেরাই ‘পণ্য’ হতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ