বাংলাদেশ ব্যাংক আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট বাজারে ছাড়া শুরু করেছে। প্রথম ধাপে নোটটি বিতরণ করা হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য শাখা থেকেও নোটটি ইস্যু করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন নোটটির দৈর্ঘ্য ১৫২ মিলিমিটার এবং প্রস্থ ৬৫ মিলিমিটার। নোটের সম্মুখভাগে বাম পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রতিকৃতি এবং মাঝামাঝি অংশে জাতীয় ফুল শাপলার পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত চিত্র রয়েছে। পেছনের অংশে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ভবনের ছবি।
জলছাপ ও রঙ পরিবর্তনশীল কালি
নতুন নোটে জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ’, যার নিচে ইলেকট্রোটাইপে রয়েছে ‘৫০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’–এর মনোগ্রাম। সবুজ রঙের আধিক্য নোটটিকে রাখবে সহজে চেনার মতো।
নিরাপত্তার জন্য এতে যুক্ত করা হয়েছে ১০ ধরনের প্রযুক্তি। এর মধ্যে ডান পাশে থাকা মূল্যমান ‘৫০০’ উন্নতমানের রঙ পরিবর্তনশীল কালিতে মুদ্রিত—নোটটি নাড়াচাড়া করলে রঙ সবুজ থেকে নীল হয়ে যায়। ভেতরে তির্যকভাবে আরেকটি ‘৫০০’ দেখা যায়।
উন্নত নিরাপত্তা সুতা ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বৈশিষ্ট্য
নোটের বামদিকে রয়েছে ৪ মিলিমিটার চওড়া লাল ও সোনালি বারের সমন্বয়ে পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা। নোট নড়াচড়া করলে লাল অংশ সবুজে রূপ নেয়। আলোর বিপরীতে ধরলে সুতায় ‘৫০০ টাকা’ লেখা দেখা যায় এবং সোনালি অংশ রংধনুর মতো প্রতিফলন সৃষ্টি করে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কথা বিবেচনা করে নোটের ডান নিচে যুক্ত করা হয়েছে পাঁচটি উঁচু বৃত্ত, যা স্পর্শে সহজে অনুভব করা যায়।
ইন্টাগ্লিও প্রিন্ট, মাইক্রোপ্রিন্ট ও ইউভি বৈশিষ্ট্য
নোটটির বিভিন্ন অংশ ইন্টাগ্লিও (উঁচুনিচু) প্রিন্টে তৈরি, যেমন—শহীদ মিনারের ছবি, মূল্যমান, প্রতিশ্রুত বাক্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম, ডান পাশে ছয়টি লাইন ইত্যাদি। পেছনে সুপ্রিম কোর্টের ছবিও ইন্টাগ্লিও প্রিন্টে করা।
মাইক্রোপ্রিন্ট নিরাপত্তা হিসেবে সম্মুখভাগে নিরাপত্তা সুতার পাশে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK’ বারবার মুদ্রিত রয়েছে। পেছনেও ‘৫০০’ লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডে একই লেখা যুক্ত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র ম্যাগনিফাইং গ্লাসে দেখা সম্ভব।
এ ছাড়া শাপলার প্রধান চিত্র UV fluorescence (Magenta) কালি দিয়ে আঁকা, যা ইউভি লাইটে জ্বলে ওঠে। নোটের কাগজেও রয়েছে নীল, লাল ও সবুজ রঙের ফাইবার, যা ইউভি আলোতে দৃশ্যমান।
গোপন বৈশিষ্ট্য ও চকচকে ফিনিশিং
গভর্নর স্বাক্ষরের পাশে See-through প্রযুক্তিতে দুই পাশে থাকা ‘৫০০’ মিলিয়ে পুরো মূল্যমানটি স্পষ্ট হয়। নোটের নিচের বর্ডারের সবুজ নকশার ভেতরে গোপনে আরেকটি ‘৫০০’ লেখা রয়েছে, যা নোটটি কাত করে ধরলে দেখা যায়।
নোটের দুই পৃষ্ঠে UV curing varnish দেওয়ায় এটি সামান্য চকচকে ও মসৃণ অনুভূত হবে।
পুরোনো নোটও বৈধ থাকবে
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নতুন নোট চালুর পরও প্রচলিত ৫০০ টাকার কাগুজে নোট ও সব ধরনের ধাতব মুদ্রা আগের মতোই চালু থাকবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০, ৫০, ১০০ এবং ১০০০ টাকার নতুন নোট বাজারে ছেড়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
এম