রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ, জোট গঠন নিয়ে যে বার্তা পাওয়া যাচ্ছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম
ফাইল ছবি

নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনীতিতে দ্রুত বদলে যাচ্ছে সমীকরণ। বড় দুই রাজনৈতিক শক্তিকে কেন্দ্র করে চলা প্রচলিত দ্বন্দ্বের বাইরে এখন ছোট-বড় অসংখ্য দল নিজেদের অবস্থান নতুন করে সাজাতে শুরু করেছে। গত দুই দিনে যে দুটি নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করেছে, তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন গতি তৈরি করেছে।

গতকাল তিন দল মিলে ‘রাজনৈতিক ও নির্বাচনী ঐক্য’ ঘোষণা করেছে এনসিপি, এবি পার্টি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তার ঠিক এক দিন পরই আজ গুলশানে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুরের নেতৃত্বে জন্ম নিল আরও বড় পরিসরের নতুন জোট—জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। দুটি ঘোষণাই নির্বাচনী মাঠের নতুন সমীকরণকে আরও স্পষ্ট করেছে।

জোটগুলোর ঘোষণার ভাষা, উপস্থিত নেতাদের অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় একটি বিষয়ই স্পষ্ট—বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠার চেষ্টা। বড় দুই জোটের বাইরে দাঁড়িয়ে ভোটারদের কাছে নতুন বার্তা পৌঁছাতে চায় তারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ের অস্থির রাজনীতিতে ছোট দলগুলোর মধ্যে টিকে থাকার চাপ বাড়ায় জোটবদ্ধ হওয়াই এখন সবচেয়ে যৌক্তিক কৌশল।

জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দুই ডজনের বেশি দল-আঞ্চলিক, ধর্মভিত্তিক, নীতিনির্ধারক প্ল্যাটফর্ম কিংবা দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব না থাকা দল-সবাইই একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে এনসিপি-এবি পার্টি-রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জোটটি তরুণ ভোটার ও অনিশ্চিত ভোটব্যাংক টার্গেট করে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে চায়।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের মতে, বড় দুই শক্তির প্রতি অনীহা এবং নেতৃত্বে নতুনতার প্রত্যাশা থেকেই এই বিকল্প জোটগুলোর উত্থান। তিনি বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে এখন ‘মধ্যম শক্তি’ গড়ে তোলার আগ্রহ বাড়ছে। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার, আসন বণ্টনে দর-কষাকষি এবং আলোচনার টেবিলে নিজের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ করে তোলাই মূল লক্ষ্য।

একই সঙ্গে বড় দুই রাজনৈতিক শক্তিও নীরবে নিজেদের জোট ও মিত্রদের পুনর্গঠনে ব্যস্ত। স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করছে তারা। একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও চাপের রাজনীতি নতুন সমঝোতার পথ খুঁজতে বাধ্য করছে তাদের।

সব মিলিয়ে রাজনীতিতে যে বার্তা পাওয়া যাচ্ছে, তা হলো- আগামী নির্বাচন শুধু ক্ষমতা পালাবদলের লড়াই নয়, বরং বিভিন্ন শক্তি ও প্ল্যাটফর্মের নতুন করে অবস্থান নির্ধারণের সময়ও। আর এতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠছে জোট–রাজনীতি।

কোন জোট কতটা টিকবে, কোন দল কোন শিবিরে যাবে, আর কারা শেষ সময়ে নতুন চমক দেখাবে-এই অনিশ্চয়তাই আগামীর রাজনৈতিক সমীকরণ নির্ধারণ করবে।

এসএইচ