সুখের সংসারটি এখন শেষের পথে

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২২, ১০:২১ পিএম

ঢাকা: বিয়ের মাত্র ৬ বছর হয়েছে সঞ্জয়ের। এর মাঝে ঘর আলোকিত করে এসেছে একটি পুত্র সন্তান। সেই সন্তানের বয়স এখন দুই বছর। সন্তানকে ঘিরে আনন্দ ও আগ্রহের সামান্যও ঘাটতি নেই তার। অফিস থেকে ফিরেই সন্তানকে কোলে নেন সঞ্জয়। এতে নাকি সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। এর মাঝে শিক্ষিকা স্ত্রীর সঙ্গে অসংখ্যবার কথা হয় সন্তানকে ভবিষ্যতে তারা কেমন মানুষ বানাবেন।

এমন স্বপ্নে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে পার হচ্ছিল তাদের সংসার। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন ধরা দেয়নি।

বিয়ের দুই বছর পর ২০১৮ সালে লিভার সিরোসিস (যখন লিভার রোগের নানা পর্যায়ের পর কোষগুলো এমনভাবে আক্রান্ত হয় যে লিভার আর কাজ করতে পারে না, সেই পর্যায়কে লিভার সিরোসিস বলে বর্ণনা করা হয়) রোগে আক্রান্ত হয় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) মাদারীপুরের সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সঞ্জয় সরকার।

৩৬ বছর বয়সী এই কর্মকর্তাকে ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন দ্রুত লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে। খরচ হবে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। কিন্তু সেই টাকা নেই সঞ্জয় ও তার পরিবারের কাছে। 

সঞ্জয় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শশিকর গ্রামের মৃত চিত্ত রঞ্চন সরকারের ছেলে। বর্তমানে তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ মাদারীপুর শহরে বসবাস করছেন। সঞ্জয়ের স্ত্রী মাদারীপুরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

সঞ্জয় বলেন, ২০১৮ সাল থেকে আমি হেপাটাইটিস বি পজিটিভ। তখন থেকেই লিভারের চিকিৎসা করে আসছি। দীর্ঘ তিন বছর ঢাকায় চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও কোনো উন্নতি হয়নি। বরং দিন দিন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। অবশেষে চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল ভারতের চেন্নাইয়ে গ্লেনিগেলস গ্লোবাল হেলথ সিটিতে যাই। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডাক্তার নিশ্চিত করেন যে আমি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। বর্তমান অবস্থায় ওষুধ দিয়ে নিরাময় করা সম্ভব নয়। ডাক্তার জানিয়েছেন বাঁচতে হলে দ্রুত লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য ৪০ লাখ টাকা প্রয়োজন। অন্যান্য খরচ তো আছেই। বলা যেতে পারে আনুষাঙ্গিকসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন।

সঞ্জয় বলেন, আমি নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। যা বেতন পাই সেটা দিয়ে ভালোই চলে। কিন্তু এত ব্যয়বহুল চিকিৎসা করার মতো টাকা নেই আমার পরিবারের কাছে।

বড় ভাই সঞ্জয় সরকারকে সুস্থ করার মিশন নিয়েছেন ছোট ভাই পিদুষ সরকার। সম্প্রতি ঢাকা পোস্ট কার্যালয়ে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে এনেছিলেন ভাইয়ের সব ব্যবস্থাপত্র।

পিদুষ সবেমাত্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করেছেন। চলছেন টিউশনি করে। এরই মাঝে বড় ভাইয়ের এমন খবরে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

পিদুষ বলেন, ভাইয়াকে বাঁচাতে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। এতে সবমিলে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে। কিন্তু ভাই-ভাবি চাকরি করে যা বেতন পান তা কয়েক বছর জমালেও এত টাকা হবে না। এ মুহূর্তে হৃদয়বান মানুষগুলোর সহযোগিতা ছাড়া আমার ভাইয়ের চিকিৎসা অসম্ভব।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর হৃদয়বান মানুষ রয়েছেন। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে তাদের অনুদানের খবর চোখে পড়ে। আমিও আশায় বুক বেঁধেছি। আমার বিশ্বাস কেউ না কেউ আমাদের পাশে দাঁড়াবে।

সঞ্জয় সরকারকে সহযোগিতা করা যাবে ব্যাংকের মাধ্যমে। হিসাব নম্বর : ১০৭১০১৩৩৪৬৭৯, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, কারওয়ান বাজার শাখা। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে যে কেউ কথা বলতে পারবেন পিদুষ সরকারের সঙ্গে। মোবাইল : ০১৫১৫-৬৬৮৯৫৬। সূত্র: ঢাকা পোস্ট

সোনালীনিউজ/এন